এই প্রথম মাঠেই টিকতে পারল না ভারত। চিনের কাছে হেরে ঘরের মাঠেই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেল। স্মার্টফোনের বাজারে প্রথম পাঁচে ঠাঁই পেল না কোনও ভারতীয় ফোন সংস্থা।
২০১৬-র শেষ ত্রৈমাসিকের এক সমীক্ষা অনুসারে এ দেশে বাজার দখলে প্রথম পাঁচে স্যামসাং ছাড়া বাকি চারটি সংস্থাই চিনের। স্যামসাং আগের মতোই এক নম্বরে। কিন্তু দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে পারেনি ফোন তৈরির ভারতীয় সংস্থা মাইক্রোম্যাক্স। বিশেষজ্ঞ সংস্থা আইডিসি-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্যামসাং-এর পরে রয়েছে শাওমি। তৃতীয় স্থানে লেনোভো। চতুর্থ ও পঞ্চমে যথাক্রমে ওপো ও ভিভো।
আইডিসি-র দাবি, ভারতীয় সংস্থার এই বাজার হারানোর পিছনে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, চিনা সংস্থাগুলি বাড়তি জোর দিচ্ছে অনলাইন বিক্রিতে। দ্বিতীয়ত, দাম কম রাখতে গিয়ে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও গুণমানেও পিছিয়ে পড়ছে দেশি সংস্থা। তৃতীয়ত, নিত্যনতুন মডেল না-এনে একই ধরনের ফোন তৈরি করছে তারা। আইডিসি ইন্ডিয়ার অন্যতম মুখপাত্র জয়পাল সিংহ বলেন, ‘‘থ্রিজি প্রযুক্তির উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও দাম কম রাখার কারণে মার খাচ্ছে দেশি মোবাইল সংস্থা।’’
আর তারই ছবি ফুটে উঠেছে বাজার দখলের পরিসংখ্যানে। ২০১৬ সালে চিনা সংস্থা ৪৬ শতাংশ বাজার দখল করেছে। সেখানে ভারতীয় সংস্থা ১৯ শতাংশেই আটকে গিয়েছে। তৃতীয়ের তুলনায় চতুর্থ ত্রৈমাসিকে শাওমির বৃদ্ধি ১৫%, ওপো-র ২৯% ও ভিভোর ৫০% বেড়েছে। চিনের এই বাড়বাড়ন্তের পাশেই রয়েছে ভারতীয় সংস্থার ম্লান ছবি। এক সময়ে দু’নম্বরে থাকা মাইক্রোম্যাক্সের বছরে বিক্রি কমেছে ২০%। ইনটেক্স, লাভা ও কার্বনের মতো ভারতীয় সংস্থার ব্যবসাও কমেছে অনেকটাই।
আইডিসি জানিয়েছে, ভারতে মোট মোবাইল বিক্রির ৩১.২% অনলাইনে হচ্ছে। দেশের এই নেট বাজারে শাওমি ও লেনোভো দৌড়ে এগিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বাজারের সদ্ব্যবহার করে উঠতে পারেনি ভারতীয় সংস্থা।
ফিচার ফোনের বাজারেও ভারতীয় সংস্থার বিপদঘণ্টি বাজতে পারে। ২০১৬ সালে ১০.৯১ কোটি স্মার্টফোন বাজারে এসেছে। ফিচার ফোন ১৩.৬১ কোটি। এই বাজারে ভারতীয় সংস্থার উপস্থিতি উজ্জ্বল। কিন্তু সেখানেও ভাগ বসাতে চলেছে চিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের বাজার থেকে শিক্ষা নিয়ে ফিচার ফোনের বাজার ধরে রাখার কৌশল দেশি সংস্থাকে ঠিক করে নিতে হবে।