শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা। ফাইল চিত্র
কর্মী-আধিকারিকদের অভিনন্দন-শুভেচ্ছা-পুষ্পস্তবক শিল্প দফতরে বৃহস্পতিবার স্বাগত জানাল নতুন মন্ত্রী শশী পাঁজাকে। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী হিসাবে শশীর হাতে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে রাজ্যের অন্যতম বড় দু’টি সামাজিক প্রকল্পের দায়িত্ব। যার ‘সাফল্য’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প-প্রচারেরও অন্যতম অঙ্গ। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, এই সবই এ বার এক সূত্রে মেলানো হল।
দায়িত্ব গ্রহণ করে শশী বলেন, ‘‘দফতরের সচিব-আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের উপরে রয়েছেন। তিনি শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানকে পাখির চোখ করেছেন। গোটা রাজ্যে শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যেমন নির্দেশ দেবেন, তেমন ভাবেই কাজ হবে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কৃতজ্ঞতা জানাই। দল আমার উপর ভরসা রেখেছে।’’
বিনিয়োগের ডাক দিতে গিয়ে শিল্পবান্ধব পরিবেশের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে এতদিন মমতার বক্তব্যে বারে বারে জায়গা পেয়ে এসেছে সামাজিক ক্ষেত্রে রাজ্যের বরাদ্দ এবং পদক্ষেপ। সেই দিক থেকে আর্থিক সমস্যা সত্ত্বেও লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করাকে ‘সাফল্য’ বলে দাবি করে সরকার। আবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া কন্যাশ্রী প্রকল্পও থাকে সরকারের প্রচার-বক্তব্যের সামনের সারিতে। এই প্রকল্পগুলিই এতদিন কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করে এসেছেন শশী।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, রাজ্যে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিজিবিএস ধরলে তা পৌঁছবে ১৫ লক্ষ কোটিতে। কিন্তু আধিকারিকদের অনেকের বক্তব্য, শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়া শিল্প দফতরের ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার উঁচু পদে কাজ করা এবং রাজনৈতিক সংগঠন সামলানোর অভিজ্ঞতা পার্থকে মমতা সরকারের শিল্প দফতরের মন্ত্রিত্ব পেতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ দেখা যায়নি। সেখানে নারী-শিশু-সমাজকল্যাণ দফতরে গৃহীত নীতি এবং প্রকল্প রূপায়ণের প্রশ্নে শশী কার্যত বিতর্কহীন।
প্রবীণ এক কর্তার কথায়, ‘‘পার্থের শিক্ষামন্ত্রিত্বের সময়কাল তীব্র বিতর্ক টেনে এনেছে। অথচ সমাজকল্যাণমন্ত্রী শশীর কার্যকর করা প্রকল্প পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। নতুন শিল্পমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে বেছে নেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সচেতন এবং তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত।’’