ইঙ্গিত নীতি আয়োগের সমীক্ষায়

‘অচ্ছে দিন’ শিল্পে দূর অস্ত্‌ই

২০১৩-’১৪ সালের আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, দশ বা তার বেশি কর্মীর সংস্থায় কাজ করেন মাত্র ২১% মানুষ। নীতি আয়োগের তিন বছরের ‘অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা’তেও বলা হয়েছে, ভাল বেতনের চাকরির অভাবই সমস্যা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৩:০০
Share:

‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এর রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে (ডান দিক থেকে) আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। ছবি: পিটিআই

শিল্পে ‘অচ্ছে দিন’ যে-এখনও দূর অস্ত্‌ই, এ বার তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নীতি আয়োগের সমীক্ষা।

Advertisement

ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র প্রচার সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গত তিন বছরে শিল্পের পালে হাওয়া সে ভাবে লাগেনি। বিনিয়োগের ঝুলি উপুড় করতে সে রকম আগ্রহ দেখাননি এ দেশের লগ্নিকারীরা। এই অবস্থায় ভারতে লগ্নির পরিবেশ কতখানি অনুকূল, তা নিয়ে দেশের ৩ হাজারের বেশি সংস্থার মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছিল নীতি আয়োগ ও আইডিএফসি ইনস্টিটিউট। যার মধ্যে ১৪১টি ছিল নতুন সংস্থা (স্টার্ট-আপ)। সেই সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে শিল্প বৃদ্ধির পথে প্রধান বাধা পুঁজি। খোদ প্রধানমন্ত্রী ব্যবসার পথ সহজ করার কথা বারবার বললেও, এখনও কাঁটা হয়ে বিঁধছে লাল ফিতের ফাঁস। আছে দক্ষ কর্মী, শ্রম সংস্কার ইত্যাদির অভাবও।

ব্যাঙ্কগুলি (বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত) অনুৎপাদক সম্পদের চাপে ধুঁকছে আজ বহু দিন। তাই নতুন করে ঋণ দিতে ইতস্তত করছে তারা। এই সমীক্ষা তাই আরও চিন্তা বাড়াচ্ছে মোদী সরকারের। দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্ক ধার দিতে না-চাওয়ায় মূলধন জোগাড়ের জন্য সঞ্চয় এবং মুনাফায় হাত দিতে হচ্ছে শিল্পকে।

Advertisement

তা ছাড়া, নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ দেশে অন্যতম চ্যালেঞ্জ, অধিকাংশ শ্রমিক-কর্মীরই ছোট সংস্থায় কাজ করা। দেখা যাচ্ছে, উৎপাদন ও বেতন বেশি, এমন সংস্থায় কাজের সুযোগ বেশ কম। কারণ, এ ধরনের সংস্থাই কম। সমীক্ষা বলছে, অনেক সংস্থাই মনে করে যে, আড়েবহরে বাড়লেই আরও চেপে বসবে লাল ফিতের ফাঁস। কর্মী সংখ্যা একশো ছাড়ালেই নাকাল হতে হবে হাজারো ছাড়পত্র জোগাড় করতে। নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগাড়িয়া বলেন, ‘‘শ্রম নির্ভর শিল্পে লাল ফিতের ফাঁস সবচেয়ে বেশি।’’

২০১৩-’১৪ সালের আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, দশ বা তার বেশি কর্মীর সংস্থায় কাজ করেন মাত্র ২১% মানুষ। নীতি আয়োগের তিন বছরের ‘অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা’তেও বলা হয়েছে, ভাল বেতনের চাকরির অভাবই সমস্যা। তাই দ্রুত শ্রম আইন সংস্কারের সুপারিশ করেছে আয়োগ।

কাজের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মসনদ দখল করা মোদী শুরু থেকেই শিল্পের অনুকূল পরিবেশ তৈরির কথা বলেছেন। বিশ্বব্যাঙ্কের ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এ যাতে ভারত উপরে থাকে, তার জন্য রাজ্যগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু করেন তিনি। দু’বছর ধরে রাজ্যগুলির স্থান (র‌্যাঙ্কিং) প্রকাশ করে শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রক। কিন্তু তা তৈরি হত রাজ্যের দেওয়া তথ্য নিয়ে। তার বদলে এ বছর সংস্থাগুলির মধ্যে সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়। পানাগাড়িয়া বলেন, ‘‘যাদের জন্য ব্যবসাকে পরিবেশ সহায়ক করার চেষ্টা, তারা কী বলছেন, সেটা জানা জরুরি।’’ নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্তের অবশ্য দাবি, ‘‘সম্প্রতি ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement