রাজকোষ ঘাটতি কমানো এবং আর্থিক উন্নয়ন, এই দুটিই হবে কেন্দ্রের নতুন সরকারের প্রথম বাজেটের প্রধান লক্ষ্য। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির এই টনিকেই বুধবার চনমনে হয়ে উঠল শেয়ার বাজার। এক লাফে সেনসেক্স বাড়ল ৩২৪.৮৬ পয়েন্ট। ২৫,৮৪১.২১ অঙ্কে উঠে গিয়ে সৃষ্টি করল নতুন রেকর্ড।
শেয়ারের পাশাপাশি এ দিন ডলারের সাপেক্ষে ৩৮ পয়সা বেড়ে গিয়েছে টাকার দামও। ফলে দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৯.৬৯ টাকা। যার প্রথম কারণ, রফতানিকারীরা ডলার বিক্রি করতে থাকায় বাজারে ডলারের জোগান বৃদ্ধি। এবং দ্বিতীয় কারণ, আমদানির জন্য ডলারের তেমন চাহিদাও না-থাকা। এই দুইয়ের যাঁতাকলে পড়েই নামে ডলার, দর ওঠে টাকার।
সরকারের লক্ষ্য নিয়ে অর্থমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে বিশেষ ভাবে উৎসাহিত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারী ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি। এ বার বাজেটে কেন্দ্র ভর্তুকি কমানো-সহ বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে একাংশের আশঙ্কা, প্রাথমিক ভাবে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।
বাজার বিশেষজ্ঞ এবং ফিনশোর ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান লক্ষ্মণ শ্রীনিবাসন বলেন, “রেলের ভাড়া বৃদ্ধি থেকেই এটা স্পষ্ট যে, কেন্দ্র বাজেটে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ করবে। পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস ইত্যাদিতে ভর্তুকি কমানো হলে অন্তত প্রাথমিক ভাবে শেয়ার বাজারের পক্ষে তা অনুকূল না-হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।” শ্রীনিবাসনের মতো বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ায় দৈনন্দিনের প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা। অত্যাবশ্যক সামগ্রীর দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের হাতে বিনিয়োগযোগ্য অর্থে টান পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা শ্রীনিবাসনের। এর বিরূপ প্রভাব এড়ানো বাজারের পক্ষে কঠিন হবে।
তবে বাজেটে কড়া পদক্ষেপ করা হলে তা যে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে দেশের আর্থিক উন্নয়নের জন্য ভাল হবে, সে ব্যাপারে অবশ্য কারওরই সংশয় নেই। বিশেষ করে এতে উৎসাহিত হবে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। কারণ, টাকা ঢালার জন্য তাদের একমাত্র বিচার্য বিষয় ভারতের আর্থিক উন্নতি। তাই শেয়ার বাজারের আশা, ওই সব লগ্নিকারী ভারতের সূচককে দ্রুত উপরে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। উল্লেখ্য, বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি গত মঙ্গলবারই ভারতের বাজারে ৮৫৬.৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এ দিন শেয়ার সূচকের দ্রুত উপরে ওঠায় ইন্ধন জুগিয়েছে অন্যান্য দেশের শেয়ার বাজার চাঙ্গা থাকার খবরও। এশিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের অধিকাংশ বাজারই এ দিন ছিল ঊর্ধ্বমুখী।