প্রতীকী ছবি।
গত ১৫ বছরের সমান সংখ্যক বৈদ্যুতিক গাড়ি দেশে বিক্রি হবে চলতি বছরেই!
দেড় দশকে দুই, তিন, চার চাকা ও বাস মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে ভারতে। শুধুমাত্র ২০২২ সালেই ততগুলি গাড়ি বিক্রি হবে বলে আশাবাদী সোসাইটি অব ম্যানুফ্যাকচারার্স অব ইলেকট্রিক ভেহিকলস (এসএমইভি)। যার মূল চালিকাশক্তি হবে দু’চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ি। গত বছরে যার বিক্রি দ্বিগুণ বেড়েছে।
এমনিতে দেশের গাড়ি শিল্পের অবস্থা বেশ নড়বড়ে। একে অতিমারি, সেই সঙ্গে পেট্রল-ডিজ়েলের চড়া দামের জন্য গাড়ি চালানোর খরচ বিপুল বেড়েছে। তাই অনেকেই গাড়ি কেনার ভাবনা পিছোচ্ছেন। এর মধ্যে জ্বালানির আমদানি খরচ কমাতে বিকল্প জ্বালানির পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে জোর দিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু গোটা বিশ্বেই এখনও বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার সার্বিক গাড়ি বাজারের ভগ্নাংশ মাত্র। মূলত এমন গাড়ির দাম বেশি। আর ভারতের মতো দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামোর অপ্রতুলতা চাহিদা বৃদ্ধির পথে অন্তরায় বলে শিল্পের দাবি। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা সুর নরম করেছে কেন্দ্র।
তবে এসএমইভি-র ডিরেক্টর জেনারেল সোহিন্দর গিল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘গত ক’মাসের মতো বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি কখনও দেখিনি। ১৫ বছরে এ ধরনের ১০ লক্ষ গাড়ি বিক্রি হয়েছিল। এ বছরেই সেই সংখ্যক গাড়ি বিক্রি হবে, আশা করছি।’’ এ ক্ষেত্রে তাঁদের মূল ভরসা কেন্দ্রের বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রকল্প ‘ফেম২’। তার সঙ্গেই বৈদ্যুতিক দু’চাকার গাড়ি বিক্রির হার বৃদ্ধিতে আস্থা রাখছেন গিল। এ প্রসঙ্গে এসএমইভি তুলে ধরেছে ২০২১ সালের বিক্রির হিসাব। যা বলছে, গত বছরে দ্রুতগতির (ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি গতিবেগ) দু’চাকার গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ৪২৫%। এই গাড়ি চালানোর জন্য লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন জরুরি। তার চেয়ে কম গতির দু’চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে সে সব যেমন লাগে না, সেগুলির দামও কম। ২০২১ সালে সেই গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ২৪%।
ফেম প্রকল্পে দ্রুতগতির দু’চাকা, চার চাকার বাণিজ্যিক গাড়ি ও বাসের ক্ষেত্রে ভর্তুকি মেলে। ফলে ভর্তুকির অভাবে কম দামি দু’চাকা বা ব্যক্তিগত চার চাকার গাড়ির চাহিদা ততটা বাড়ছে না। গিলের বক্তব্য, পেট্রলের চড়া দরের জেরে তাই অনেকেই সব মিলিয়ে খরচ কম বলে দ্রুতগতির বৈদ্যুতিক দু’চাকার গাড়ি কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন। তাতে ভর করেই এ বছরে ব্যবসা পাঁচ-ছ’গুণ বাড়বে বলে আশা তাঁর।
আর গাড়ির ডিলারদের সংগঠন ফাডা-র পূর্বাঞ্চলের বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবসার ডিরেক্টর রোহিত চৌধুরী এ দিন বলেন, পেট্রলচালিত দু’চাকার গাড়ির সঙ্গে ভর্তুকি দেওয়া বৈদ্যুতিক দু’চাকার গাড়ির দামের ফারাক খুব বেশি নয়। ফলে সেই গাড়ির চাহিদা বেশি বাড়ছে। তবে বৈদ্যুতিক চার চাকার গাড়িতেও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। উপরন্তু এখন গাড়ি সংস্থাগুলি অনেক বেশি করে এমন গাড়ি তৈরি করায় সেটির চাহিদাও বাড়বে বলে আশায় রয়েছেন তাঁরা।