সিন্হাকে স্বাগত জানাচ্ছেন ভারত চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডান দিকে) সীতারাম শর্মা। মঙ্গলবার কলকাতায়।
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) গুটিয়ে নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন সেবি চেয়ারম্যান ইউ কে সিন্হা। যদিও কর্তৃপক্ষের ধারণা, স্টক এক্সচেঞ্জটি চাঙ্গা করার যথেষ্ট সুযোগ এখনও রয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতায় ভারত চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত দেশের শেয়ার বাজার নিয়ে এক সভায় সিন্হা বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের টিকে থাকার কোনও সম্ভাবনা রয়েছে।’’ বস্তুতপক্ষে সিন্হা মনে করেন, শুধু সিএসই নয়, দেশে কোনও আঞ্চলিক স্টক এক্সচেঞ্জেরই আর প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই ১৯টি এ ধরনের এক্সচেঞ্জ বন্ধও হয়ে গিয়েছে।
তবে সিএসই-র এক কর্তার দাবি, ‘‘সিন্হা ওই কথা বললেও আমাদের ধারণা, এই স্টক এক্সচেঞ্জকে চাঙ্গা করে তোলার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কী ভাবে তা করা যায়, সেটি নিয়ে একটি সমীক্ষাও কর্তৃপক্ষ করিয়েছেন।’’
এ দিকে ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে পূর্বাঞ্চল থেকে একটি সংস্থাও নতুন শেয়ার বা আইপিও ছাড়ার আবেদন করেনি। সিন্হা জানান, ‘‘শুধু ৬টি ছোট -মাঝারি সংস্থা তাদের জন্য নির্ধারিত এসএমই এক্সচেঞ্জে শেয়ার ছেড়ে ৪২ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছে।’’ এর কারণ খতিয়ে দেখতে বণিকসভাগুলিকে অনুরোধ করেন তিনি।
সেবি-কর্তা বলেন, ‘‘সারা দেশে নতুন ইস্যু খাতে বাজার থেকে ২৬ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে বিভিন্ন সংস্থা। তবে এর মধ্যে সিংহভাগই আর্থিক পরিষেবা সংস্থা। উৎপাদন শিল্পের সংখ্যা খুবই কম।’’
পূর্বাঞ্চলের এক শ্রেণির লগ্নিকারীর বিরুদ্ধে এ দিন অভিযোগও আনেন সিন্হা। তিনি বলেন, ‘‘কিছু অসাধু লগ্নিকারী এবং ব্রোকার নিজেদের মধ্যে যোগসাজশে দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনী লাভকর ফাঁকি দিয়েছেন। আমরা তদন্ত করে দেখেছি, মোট ১০ হাজার কোটি টাকার লেনদেনে তাঁরা ওই কর এড়িয়েছেন।’’ কী ভাবে কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে, তার বিবরণ দিতে গিয়ে সিন্হা বলেন, কৃত্রিম ভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে মুনাফা দেখিয়ে তার উপর দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনী লাভকর ছা়ড়ের সুবিধা বেআইনি নিয়েছেন তাঁরা।’’ এই রকম ২০০টি সংস্থা এবং ব্যক্তিকে সেবি নোটিস দিয়েছে বলেও জানান সিন্হা।
দেশের শেয়ার বাজারের ব্যাপারে সিন্হা মন্তব্য করেন, বর্তমানে সূচকের ওঠা-নামা আগের মতো আর বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল নয়। একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন যে, ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশের বাজার থেকে ১১০০ কোটি ডলারের মতো লগ্নি ওই সব সংস্থা তুলে নিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শেয়ার বাজারের পতন হয়নি। ভারতীয় আর্থিক সংস্থা, পেনশন তহবিল এবং বিমা সংস্থা বড় অঙ্কের লগ্নি করার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি সিন্হার।