টাটা-মিস্ত্রি কাণ্ড এ বার নজরে রাখছে সেবি

গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদ থেকে সাইরাস মিস্ত্রি সরতে বাধ্য হওয়ার পরেই এ ব্যাপারে তৎপর হল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচে়ঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এবং দুই প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ বিএসই ও এনএসই। সেবি-র মূল উদ্বেগ, বাজারে নথিভুক্তি ও সংস্থা পরিচালনা সংক্রান্ত নিয়ম টাটা গোষ্ঠী ভেঙেছে কি না, তা নিয়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩১
Share:

টাটা গোষ্ঠীর উপর নজর রাখতে শুরু করল মূলধনী বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি।

গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদ থেকে সাইরাস মিস্ত্রি সরতে বাধ্য হওয়ার পরেই এ ব্যাপারে তৎপর হল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচে়ঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এবং দুই প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ বিএসই ও এনএসই। সেবি-র মূল উদ্বেগ, বাজারে নথিভুক্তি ও সংস্থা পরিচালনা সংক্রান্ত নিয়ম টাটা গোষ্ঠী ভেঙেছে কি না, তা নিয়ে। এ দিকে, অলাভজনক খাতে লগ্নি করে টাটাদের প্রায় ১.২০ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ মুছে যাওয়ার অভিযোগ মিস্ত্রি টাটা সন্স পরিচালন পর্ষদের সদস্যদের কাছে লেখা চিঠিতে এনেছেন। তা ঠিক কি না, জানতে চেয়েই গোষ্ঠীকে নোটিস পাঠিয়েছে বিএসই এবং এনএসই। বিশেষ করে স্টক এক্সচেঞ্জের নজরে রয়েছে টাটা মোটরস, টাটা স্টিল, ইন্ডিয়ান হোটেলস, টাটা টেলি, টাটা পাওয়ারের মতো সংস্থা। টাটা পাওয়ার ইতিমধ্যেই বিএসই-কে পাঠানো জবাবে বলেছে, ‘‘অভিযোগ মূলত মুন্দ্রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কেনা নিয়ে। তার সব তথ্য আগেই দাখিল করেছি। তাই আমাদের মন্তব্য করার আর কিছু নেই।’’

Advertisement

বুধবার সেবি সূত্রের খবর, পরিস্থিতির উপর সজাগ দৃষ্টি রাখছে তারা। এবং কোনও অনিয়মের হদিস পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, ঘটনা যে-ভাবে মোড় নিচ্ছে, তার প্রতিটি পর্বই তারা খতিয়ে দেখছে। ২৪টিরও বেশি নথিভুক্ত সংস্থা মিলিয়ে ১০ হাজার কোটি ডলারের (৬ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার) টাটা গোষ্ঠীর পরিচালনায় আইন ভাঙা হয়েছে কি না, সেটাই তাদের মূল বিচার্য বিষয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির এক অফিসার বলেন, ‘‘সংস্থা পরিচালনা, নথিভুক্তি, কিংবা সেবি-র অন্য কোনও নিয়ম ভাঙা হয়েছে বলে ইঙ্গিত মিললেই আমরা ব্যবস্থা নিতে একটুও দেরি করব না।’’

চিঠিতে আনা মিস্ত্রির অভিযোগ সত্যি কি না, এবং সে ক্ষেত্রে গোষ্ঠীর তরফে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা কী, বস্তুত সেটাই জানতে চেয়েছে সেবি এবং বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জ। মিস্ত্রি বিদায়ের ধাক্কায় মঙ্গলবার বাজার থেকে টাটা গোষ্ঠীর প্রধান সংস্থাগুলির শেয়ার মূল্যের প্রায় ১০,৭০০ কোটি টাকা মুছে গিয়েছিল। বুধবারও শেয়ার মূল্যে প্রায় ১০,০০০ কোটি হারিয়েছে তারা। টাটা মোটরস, টাটা স্টিল, টাটা মেটালিক্স, টাটা এলেক্সি, টাটা গ্লোবাল বেভারেজেসের মতো সংস্থার দর পড়েছে ৪.২৭% পর্যন্ত। ফলে সব মিলিয়ে বাজার থেকে দু’দিনে মুছে গিয়েছে তাদের প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার শেয়ার-মূল্য। পুরো বিষয়টির কারণ জানতে চেয়েছে সেবি, বিএসই ও এনএসই। প্রসঙ্গত, এ দিন টাটা কাণ্ড এবং বিশ্ব বাজারের ধাক্কায় সেনসেক্স খুইয়েছে প্রায় ২৫৫ পয়েন্ট।

Advertisement

দেশের দুই প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ বিএসই এবং এনএসই টাটা গোষ্ঠীকে স্পষ্ট করতে বলেছে, এ পর্যন্ত যে-সব তথ্য বিভিন্ন প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে, সেগুলি কতটা সত্যি। যদি সত্যি হয়, তা হলে টাটাদের সময় অনুসারে ঘটনাগুলি সাজিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। জানাতে হবে, সংস্থার ব্যবসার উপর সেগুলি কতটা ছাপ ফেলতে পারে। গোষ্ঠীর কোনও সংস্থার নথিভুক্তির সময়ে গোপন করা হয়েছিল এমন তথ্য থাকলে তা-ও টাটাদের এখন জানাতে হবে স্টক এক্সচেঞ্জকে।

তথ্য তলব

পরিচালনা, নথিভুক্তির নিয়ম মানা হয়েছে কি না

মিস্ত্রিকে সরানোর ঘোষণার ঠিক আগে শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ, দরের ওঠা-পড়ার খতিয়ান

টাটা মোটরস, টাটা স্টিল, ইন্ডিয়ান হোটেলস, টাটা টেলি, টাটা পাওয়ারে বিশেষ নজর

যা খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা সত্যি কি না জানানো

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement