হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা জমা না-দেওয়ায় এপ্রিলে সহারার অ্যাম্বি ভ্যালি নিলামে তোলার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী দিনে সেই নির্দেশ শীর্ষ আদালত বহাল রাখবে ধরে নিয়েই এ বার তার প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে মূলধনী বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। সে ক্ষেত্রে জুনের দ্বিতীয়ার্ধেই ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের এই সম্পত্তি নিলামে উঠতে পারে। মুম্বইয়ের লোনাওয়ালা থেকে ২৩ কিমি দূরে পুণের যে বিলাসবহুল উপনগরীটির গায়ে সাঁটা সহারার তৈরি সেরা প্রকল্পের তকমা। বাজার থেকে সংস্থার বেআইনি ভাবে তোলা টাকা লগ্নিকারীদের ফেরাতেই এই প্রথম এত বড় মাপের নিলামের পথে হাঁটছে সেবি।
সেবি সূত্রের খবর, অ্যাম্বি ভ্যালির ন্যূনতম দর ঠিক করে লিক্যুইডেটরের রিপোর্ট আগেই জমা পড়েছে। যার অঙ্ক ৩৭,৩৯২ কোটি টাকা। নিলামের নিয়ম-কানুনও প্রায় চূড়ান্ত। তবে ৮,৯০০ একরে তৈরি এই উপনগরীর যে-সব সম্পত্তি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে, এখনও ঝুলে রয়েছে সেগুলির ভবিষ্যৎ। সেবি-র দাবি, ওই সম্পত্তিগুলির চুক্তিপত্র খতিয়ে দেখার কাজ চলছে এখন। কী শর্তে হাতবদল হয়েছে, সহারা সেগুলি লিজে দিয়েছে না কি সরাসরি ক্রেতাকে বেচেছে, দাম কত নেওয়া হয়েছে, ইত্যাদি বুঝতে কাগজপত্র খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। গোটা পর্ব সারা হলে তবেই বিক্রি হয়ে যাওয়া সম্পত্তিগুলি নিয়ে আদপে কী করা উচিত, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেবি।
২৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়ে সহারা-কর্তা সুব্রত রায় বলেন, তিনি ১৫ জুনের মধ্যেই ১,৫০০ কোটি টাকার চেক জমা দেবেন। আদালত সেই শর্ত মানলেও, অ্যাম্বি ভ্যালি নিলাম রদ করেনি। বরং সুব্রতবাবুকে হুঁশিয়ারি দেয়, ১৯ জুনের মধ্যে চেক ভাঙানো না-গেলে তাঁকে ফিরতে হবে তিহাড় জেলে। ১৯ জুনই সহারা-সেবি মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিনও সুব্রতবাবুকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সহারা অবশ্য অ্যাম্বি ভ্যালির নিলাম আটকাতে চেষ্টার কসুর করেনি। সংস্থার আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে বলেন, অ্যাম্বি ভ্যালি নিলামে উঠলে গোটা সংস্থাই ভেঙে পড়বে। এমনকী দরপত্রদাতারা বেআইনি ভাবে সুবিধা নিতে পারেন বলেও আশঙ্কা জানানো হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এতে কান দেয়নি। সেবি-কর্তারা মনে করছেন, ১৯ জুনও সহারা নিলাম আটকানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু সে দিন আদালত সায় না-দিলে, নিলামের জন্য হাতে বেশি সময় থাকবে না। তাই আগেই প্রস্তুতি সেরে রাখছে তারা।