শহরে ইউ কে সিংহ (মাঝে)।—নিজস্ব চিত্র।
শিল্পে লগ্নির জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শেয়ার ছেড়ে মূলধন জোগাড়ের হার দ্রুত বেড়েছে। কিন্তু এই দৌড়ে আদৌ নাম নেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলের কোনও রাজ্যের সংস্থার। এই তথ্য জানিয়েছেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) চেয়ারম্যান ইউ কে সিংহ।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় ভারত চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত শেয়ার বাজার নিয়ে এক আলোচনাসভায় সিংহ বলেন, ‘‘২০১৪-’১৫ সালে বাজারে শেয়ার ছেড়ে ৯,৭৫০ কোটি টাকার মূলধন তুলেছে বিভিন্ন শিল্প সংস্থা। চলতি ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসেই সেই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু পূর্বাঞ্চল থেকে শেয়ার ছাড়ার জন্য একটিও সংস্থার আবেদনপত্র পায়নি সেবি। এর থেকেই বোঝা যায়, এই অঞ্চলে লগ্নির ব্যাপারে তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই উদ্যোগপতিদের।’’
এর কারণ ব্যাখ্যা করে সিংহ বলেন, ‘‘পূর্বাঞ্চলে শিল্প বলতে বোঝায় চা। কিন্তু সেখানকার উদ্যোগপতিদের উচিত নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের ব্যাপারে ভেবে দেখা।’’
অন্য দিকে, বাজারে নতুন শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি আগের থেকে অনেক বেশি সরল করা হয়েছে বলে দাবি করে সিংহ বলেন, ‘‘দেশের ব্যাঙ্কগুলির সমস্ত শাখায় যাতে ‘অ্যাট পার’ সুবিধা পাওযা যায়, তার জন্য আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। বর্তমানে ৯৯ হাজার শাখায় ওই সুবিধা রয়েছে।’’ উল্লেখ্য, এই সুবিধা থাকলে একটি ব্যাঙ্কের চেক দেশের যে-কোনও ব্যাঙ্কের শাখায় ভাঙানো যায়। এর জন্য বাড়তি চার্জ লাগে না।
এ দিকে, পুরসভার ইস্যু করা বন্ডের বাজার ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে সেবি। সিংহ জানান, ‘‘সারা বিশ্বে পুরসভা-বন্ডের ভাল বাজার আছে। অথচ ভারতে তা দেখা যায় না। তবে সেই সব পুরসভাকেই বন্ড ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে, যাদের যথাসময়ে ঋণ শোধের রেকর্ড আছে। তা ছাড়া নির্দিষ্ট কোনও প্রকল্পের জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই শুধু বন্ড ছাড়া যাবে।’’ এ ব্যাপারে বিস্তারিত নির্দেশিকা শীঘ্রই সেবি প্রকাশ করবে।
ভারতের শেয়ার বাজার এখন বিদেশি লগ্নিকারীদের বিনিয়োগের উপরই শুধু নির্ভর করছে না বলেও এ দিন মন্তব্য করেন সিংহ। তাঁর দাবি, এ দেশের আর্থিক সংস্থাগুলি এখন এই লগ্নিতে সমান পাল্লা দিচ্ছে। দেখা গিয়েছে, যখন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা শেয়ার বেচছে, তখন টানা শেয়ার কিনছে ভারতীয় আর্থিক সংস্থা। এতে ওই সব সংস্থা লাভবান হয়েছে। আবার বিদেশি সংস্থার শেয়ার বিক্রির জেরে বাজার সে ভাবে পড়েওনি।