খাতায়-কলমে নিয়ম হল, প্রথম বার শেয়ার ছাড়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাথমিক সায় পেলে, তার ৩০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে সেবি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সবুজ সঙ্কেত পেতে গড়িয়ে যাচ্ছে বছর। প্রথম বার শেয়ার ছাড়ার (আইপিও) জন্য অনুমোদন দিতে এত সময় নেওয়ার কারণে তাই অভিযোগের মুখে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, গত এক বছরে মাঝেমধ্যে পতন ছাড়া মোটের উপর বেশ চাঙ্গাই থেকেছে বাজার। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসা সম্প্রসারণের মূলধন জোগাড়ের জন্য বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে টাকা তুলতে আগ্রহী হয় অনেক সংস্থাই। বিশেষত ছোট সংস্থাগুলি। কিন্তু সেবির কাছে অনুমোদন জোগাড় করতে প্রচুর সময় লাগায় চড়া সুদেও ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিতে বাধ্য হচ্ছে তারা। আর নয়তো নথিভুক্ত হচ্ছে বিদেশের বাজারে। যেমন, দু’বছরেও অনুমতি না-মেলায় শেষ পর্যন্ত মার্কিন শেয়ার বাজার নাসড্যাকে নথিভুক্ত হয়েছে স্যাটেলাইট টিভি পরিষেবা সংস্থা ভিডিওকন ডিটুএইচ। লাল ফিতের ফাঁসের কারণে সেবির বিরুদ্ধে দেরির অভিযোগ রয়েছে আইনক্স উইন্ড-এরও। এই মাস থেকেই তাদের শেয়ার বেচাকেনা শুরু হয়েছে। কিন্তু তার আগে নথিভুক্তির জন্য প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।
হংকঙের বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পেতে সাধারণত অপেক্ষা করতে হয় এক থেকে দু’মাস। খুব কমই তা ছ’মাস ছাড়ায়। সেখানে এ দেশে তা করতে বছর গড়িয়ে যাচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
এ বিষয়ে সরকারি ভাবে বিবৃতি দেয়নি সেবি। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্তাদের কেউ কেউ একান্তে বলেন যে, তাঁরা চান না তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভুল হোক। ক্ষতি হোক সাধারণ লগ্নিকারীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেবি কর্তা জানান, গত পাঁচ বছরে স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন পাওয়ার পরেও বাজারের মুখ দেখেনি প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত শেয়ার। হয় সংস্থাই পরে তা ফিরিয়ে নিয়েছে, নয়তো পড়েই থেকেছে সেই ‘অফার ডকুমেন্ট’। কিন্তু তাঁর মতে, তা সত্ত্বেও কিছুটা ধীরে চলা ওই বাড়তি সাবধানতার কারণেই।