শেয়ার বাজারের ধাঁচে ভারতে কোম্পানি ঋণপত্রের বাজারকে ঢেলে সাজতে একগুচ্ছ সুপারিশ জানাল বিশেষজ্ঞ কমিটি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজনের কাছে পেশ করা এই রিপোর্টে এ ধরনের ঋণপত্র বা কর্পোরেট বন্ডের বাজারের পরিধি বাড়াতে বলেছে তারা।
ভারতে কোম্পানি ঋণপত্রের বাজারের প্রসারের লক্ষ্যে গড়া এই কমিটির প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে: ১) সেনসেক্স, নিফ্টির ধাঁচে সূচক তৈরি করা। সে ক্ষেত্রে কর্পোরেট বন্ড সরাসরি কেনাবেচা করা যাবে কোনও স্বীকৃত স্টক এক্সচেঞ্জে। তবে সেই লেনদেনে থাকবেন না মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্রোকার-রা। স্টক এক্সচেঞ্জের বাইরে সরাসরি ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) লেনদেনেও এগুলি কেনাবেচা করা যেতে পারে বলে মত কমিটির। ২) বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ঋণের বোঝা কিছুটা লাঘবের লক্ষ্যেও কর্পোরেট বন্ডকে হাতিয়ার করতে বলেছে কমিটি। যে-সব বড় মাপের কর্পোরেট সংস্থার ব্যাঙ্কঋণ নির্দিষ্ট সীমা ছাড়াবে, তাদের মূলধন জোগাড়ের জন্য বাধ্যতামূলক ভাবে এই বাজারে আসতে বলেছে কমিটি। কার্যকরী মূলধন ও মেয়াদি ঋণের টাকার একাংশের সংস্থান করতে এই রাস্তাই বাতলেছে কমিটি। ৩) এই বন্ড গচ্ছিত রেখে ব্যাঙ্কগুলির আরবিআই ঋণ পাওয়ার নিয়মও চালু করতে বলেছে কমিটি। এখন শুধু সরকারি ঋণপত্রই গচ্ছিত রাখা যায়। ৪) বিদেশি লগ্নি সংস্থার এই বাজারে পা রাখার পথ মসৃণ করার পক্ষে রায় দিয়েছে কমিটি। সে কারণেই বিদেশি মুদ্রা পরিচালন আইন বা ফেমা সংশোধনের সুপারিশও রয়েছে।
বিভিন্ন সুপারিশ কার্যকর করার জন্য সময়সীমাও দিয়েছে কমিটি। যেমন, তারা বলেছে, বাধ্যতামূলক ভাবে কোম্পানি ঋণপত্র ছাড়ার প্রস্তাব নিয়ে নির্দেশিকা সেপ্টেম্বরের মধ্যে আনতে পারে আরবিআই। কমিটি চায় বিদেশি লগ্নি সংস্থার জন্য নির্দেশিকা জানানো হোক চলতি মাসের শেষাশেষি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, অর্থ মন্ত্রক, সেবি এবং বিমা ও পেনশন তহবিল সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ এবং পিএফআরডিএ-র প্রতিনিধিরা ছিলেন এই কমিটিতে। ২০১৫ সালে গড়া কমিটির প্রধান আর বি আইয়ের তখনকার ডেপুটি গভর্নর এইচ আর খান। আর বি আইয়ের গভর্নর থাকার সুবাদে আর্থিক স্থিতি ও উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজন। তাই তাঁর কাছে পেশ করা হয়েছে এই রিপোর্ট। বৃহস্পতিবার এটি প্রকাশ করেছে মূলধনী বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি।