তরুণ প্রজন্মের জন্য কাজ। গ্রামের বাজার চাঙ্গা করতে চাষিদের রোজগার বাড়ানো। কারখানা ও ব্যবসায় জোয়ার আনার লক্ষ্যে একগুচ্ছ সংস্কার। মূলত এই ছবি এঁকেই দ্বিতীয় দফার মোদী সরকারের কাজের রূপরেখা স্পষ্ট করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
নতুন লোকসভার প্রথম যৌথ অধিবেশনে তাঁর বক্তৃতায় আজ স্পষ্ট হল, সরকারের অন্দরমহলে চাকরির অভাব, বৃদ্ধিতে মন্দ গতি ও কৃষকদের দুরবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। ভোটের আগে স্বীকারে অরাজি হলেও, এখন তার সমাধান করতে চায় কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীও আজ নিজে বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রকের সচিব, কর-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
গত পাঁচ বছরে চাষিদের ঋণ মকুবের দাবি, আত্মহত্যা, ফসলের উচিত দামের মতো বিষয়ে আন্দোলন হয়েছে। এ দিন রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘মজবুত গ্রামীণ অর্থনীতির ভিতেই মজবুত জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব।’’ আগামী দিনে তরুণ প্রজন্মের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া রুখতে তিনি জোর দিয়েছেন সমাজের সমস্ত স্তরের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের উপর। লক্ষ্য, চাকরি ও ব্যবসার পথ প্রশস্ত করা।
লগ্নি টানতে নতুন শিল্পনীতি
• ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতির মাপ ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া। তার জন্য জোর বিশেষত কৃষি ও শিল্পে।
• উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর নতুন সংস্থা (স্টার্ট-আপ) তৈরির রাস্তা সহজ করতে নিয়মের সরলিকরণ।
• ৫ বছরে লক্ষ্য ৫০ হাজার স্টার্ট-আপ। এখন সংখ্যা ১৯,২৮০টি।
• বছরে ১০ হাজার কোটি ডলার বিদেশি লগ্নির পথ মসৃণ করা।
• ব্যবসার পরিবেশ সহজ করার (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) ক্ষেত্রে ৭৭ থেকে ৫০ নম্বরে ওঠা।
• সে জন্য জোর কোম্পানি আইন এবং কর ব্যবস্থার (আয়কর, কর্পোরেট কর, জিএসটি-সহ পরোক্ষ কর) সরলিকরণে।
• ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখতে জাতীয় ব্যবসায়ী কল্যাণ পর্ষদ।
• মুদ্রা প্রকল্পে ৩০ কোটি জনকে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য।
• নতুন ব্যবসা শুরু করতে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বন্ধকহীন ধারের বন্দোবস্ত।
• ছোট-মাঝারি শিল্পে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণে গ্যারান্টি।
• ২০২২ সালের মধ্যে ৩৫ হাজার কিলোমিটার হাইওয়ে তৈরির কাজ। জোর উন্নত রেল পরিষেবা এবং উড়ান প্রকল্পেও।
• শিল্পের প্রয়োজন মাফিক গবেষণার জন্য কেন্দ্র, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প সংস্থার সেতুবন্ধনে ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন থাকলেও, এ বার নতুন শিল্প নীতি তৈরির কথা বলা হয়েছে। মাথায় রাখা হয়েছে বিজেপির অন্যতম ভোটব্যাঙ্ক ছোট ব্যবসায়ীদের কথাও।