—প্রতীকী চিত্র।
গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের আর্থিক বৃদ্ধি প্রত্যাশা ছাপিয়ে ৮.৪% ছুঁয়ে ফেলার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, এই হার ভারতের অর্থনীতির শক্তি ও ক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে। কিন্তু জিডিপি-র (মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) বৃদ্ধির এই হারের সঙ্গে জিভিএ (মোট যুক্ত মূল্য বা দেশের বাজারে উৎপাদিত পণ্য ও পরিষেবার মোট মূল্য) বৃদ্ধির হার মিলছে না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। জিভিএ বা উৎপাদিত পণ্যের মোট মূল্য দেশের মোট আয় মাপারও একটি মাপকাঠি। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, অক্টোবর-ডিসেম্বরে জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৮.৪%। কিন্তু জিভিএ বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৬.৫%।
অর্থনীতিবিদেরা বলেন, জিডিপি-র থেকেও জিভিএ-র হিসাব দিয়ে অর্থনীতির হালহকিকত বেশি ভাল ভাবে বোঝা যায়। কারণ, জিভিএ-র সঙ্গে কর ও ভর্তুকির নিট ফল যোগ করে জিডিপি পাওয়া যায়। ধরা যাক, দেশে গত বছর ১০০ টাকা মূল্যের পণ্য তৈরি হয়েছিল। এ বছরও ১০০ টাকা মূল্যের পণ্য তৈরি হয়েছে। জিভিএ-র হিসাব বলবে, বৃদ্ধির হার শূন্য। কিন্তু ওই পণ্যের উপর যদি এ বছর ২০ টাকা কর চাপে, তা হলে গত বছরের জিডিপি ১০০ টাকা হলেও এ বছর তা ১২০ টাকা হবে। সে ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ২০%। অর্থাৎ বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটল না জিডিপির তথ্যে।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের দাবি, ‘‘অক্টোবর-ডিসেম্বরের ৮.৪% বৃদ্ধির হারের পরে ফেকু মাস্টারের নেতৃত্বে বিজেপির স্পিন ডক্টররা বলছেন, এটা চকমকে ভারতের প্রতিফলন। বাস্তবে নিট করে বড় বদলের ফলে জিডিপি এতখানি বেশি দেখাচ্ছে।’’ অর্থনীতিবিদদের মতে, কর আদায় ১৫% বাড়ায় জিডিপি এবং জিভিএ-র বৃদ্ধির হারের মধ্যে এতখানি ফারাক দেখাচ্ছে। চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে জিভিএ বৃদ্ধির হারই প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
আজ বিরোধীরা মনে করিয়েছেন, মোদী সরকার যতই লোকসভা ভোটের আগে ৮.৪% বৃদ্ধি নিয়ে ঢাক পেটাক, বাস্তব হল, চলতি অর্থবর্ষে মানুষের কেনাকাটার খরচ মাত্র ৩% হারে বাড়বে বলে অনুমান। যা ২০ বছরে সর্বনিম্ন। চলতি অর্থবর্ষে মাথা পিছু কেনাকাটার খরচ ২.১% হারে বাড়বে বলে অনুমান। কোভিডের বছর ছাড়া ২০০২-০৩ সালের পরে এত শ্লথ গতিতে কেনাকাটার খরচ বাড়েনি।