—প্রতীকী চিত্র।
একেই পণ্যের দাম চড়া। তার উপর বিপুল সুদে আর্থিক বোঝা বেড়েছে ঋণগ্রহীতার। খরচে নাকাল শিল্পও। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠকের আগে তাই ফের উঠছে প্রশ্ন, সুদ কমবে কবে? মঙ্গলবার তিন দিনের বৈঠক শুরু ঋণনীতি কমিটির। সুদ ঘোষণা বৃহস্পতিবার।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সুদ অপরিবর্তিতই থাকবে। কারণ মূল্যবৃদ্ধির হার ডিসেম্বরেও ছিল সর্বোচ্চ সহনসীমা ৬ শতাংশের কাছে। তাতে পুরোপুরি রাশ টানা না গেলে আরবিআই ঝুঁকি নেবে না। সে ক্ষেত্রে সুদ ছাঁটাই হতে হতে গড়িয়ে যেতে পারে অগস্ট-সেপ্টেম্বর। বিশেষত মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে নামানোই যেহেতু লক্ষ্য তাদের।
ব্যাঙ্ক অব বরোদার মুখ্য অর্থনীতিবিদ মদন সবনভিস-এর মতে, মূল্যবৃদ্ধি এখনও চড়ে। আরও চড়ার আশঙ্কা যায়নি। কারণ খাদ্যপণ্যে দামের চাপ বহাল। তাই সুদ হয়তো বদলাবে না এখন। সুদ বৃদ্ধির পথও খোলা রাখতে পারে আরবিআই। তিনি বলছেন, উঁচু সুদে আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। কিন্তু সেটা না হওয়ায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক নিশ্চিন্ত। তাই তড়িঘড়ি সুদ কমানোর ঝুঁকি নেবে না। তা ছাড়া তারা বলেছে, লাগাতার তাদের ২৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধির পুরোটা এখনও বাজারে পৌঁছয়নি। সেটাও সুদ স্থির রাখার কারণ।
মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার গবেষণা বিভাগের প্রধান অদিতি নায়ারের বক্তব্য, ‘‘আশা করছি আগামী অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামাবে। তবে তা নির্ভর করবে বর্ষার উপর। তখন সুদ কমানোর কথা ভাবতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু এ বার তাতে বদল হবে বলে মনে করছি না।’’ অদিতির ধারণা, সে ক্ষেত্রে অগস্টের আগে সুদ কমবে না। উপদেষ্টা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্সের রিপোর্টেও বলা হয়েছে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা নেই। কারণ খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে এখনও ৪ শতাংশে বাঁধা যায়নি।
হাউসিং ডট কমের সিইও ধ্রুব আগরওয়াল মনে করেন, আরবিআই সতর্ক। তাই এখন সুদ বদলাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনা এবং মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার মধ্যে ভারসাম্য রাখা জটিল কাজ। বিশেষত মূল্যবৃদ্ধির যেখানে ৬% পেরনোর ঝুঁকি বহাল।’’ তাঁদের অভিমত, বর্ষা অনিয়মিত হওয়ায় কৃষি ধাক্কা খেয়েছে। ফলে বাজারে খাদ্যপণ্যের জোগান কমলে দাম বাড়বে। যা মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলবে। তাই সুদের হার কমানোয় ধীরে চলো নীতিই থাকবে দেশে।