—প্রতীকী চিত্র।
বেশ কিছু দিন ধরেই সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী। একের পর এক উচ্চতার শিখরে পা রাখছে নজিরবিহীন ভাবে। যার কারণ, চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার মধ্যে দাঁড়িয়ে সুরক্ষিত লগ্নির ঠিকানা হিসেবে তাকে আঁকড়ে ধরার হিড়িক। এ বার পশ্চিম এশিয়ায় চড়তে থাকা উত্তেজনার পারদ তাকে আরও ঠেলে তুলল। কারণটা একই। মঙ্গলবার কলকাতার বাজারে খুচরো পাকা সোনা (১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট) এই প্রথম পৌঁছল ৭৪,২০০ টাকায়। জিএসটি নিয়ে পার হল ৭৬ হাজার। একই ভাবে নজির গড়েছে গয়না তৈরির সোনা। এই প্রথম ছুঁয়েছে ৭০,৫৫০ টাকা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ইজ়রায়েলে ইরানের হামলার জের বহু দূর গড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে পশ্চিম এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক সংঘর্ষের উত্তাপ বাড়বে আঁচ করে লগ্নিকারীরা সোনাতেই ঝুঁকছেন। ফলে বিশ্ব জুড়ে তার চাহিদা বাড়ায় আউন্স পিছু দাম ২৩৭০ ডলারে উঠেছে। সেই ধাক্কা আছড়ে পড়ছে ভারতেও। পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের দাবি, ‘‘অনিশ্চয়তার আবহে মানুষ সোনাকে কতখানি ভরসা করেন, তা আবার প্রমাণিত হল। শেয়ার বাজার পড়ছে। কারণ, ঝুঁকির লগ্নি এড়াচ্ছেন অনেকেই। বরাবর খারাপ সময়ে সোনার কদর বাড়ে।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর কমলে সোনার বিক্রি আরও বাড়বে। তার উপর বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সঙ্কট মোকাবিলার জন্য নিজেদের হাত শক্ত করছে। তাই ভারতের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ প্রায় সকলেই লাগাতার সোনা কিনছে। তাতেও বাড়ছে চাহিদা।
স্বর্ণশিল্পের সংগঠন ন্যাশনাল জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে বলছেন, ‘‘পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট না কমা পর্যন্ত সোনার দাম মাথা নামাবে বলে মনে হয় না। লগ্নিকারীরা মুনাফা ঘরে তুলতে মাঝেমধ্যে তা বিক্রি করলে হয়তো সাময়িক একটু কমতে পারে। কিন্তু ফের বাড়বে।’’ তাঁর দাবি, পয়লা বৈশাখে গয়নার বিক্রি যতটা খারাপ হওয়ার আশঙ্কা ছিল, ততটা হয়নি বটে। তবে বহু সাধারণ রোজগেরে মানুষ বিয়ের কেনাকাটা করতে এসে বিপাকে পড়ছেন। এখনকার দামে গয়না কেনার সাধ্য নেই অনেকের।