দারিদ্রসীমার নীচে (বিপিএল) থাকা পরিবারের মহিলাদের রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার জন্য গত বছর প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা (পিএমইউওয়াই) চালু করেছিল কেন্দ্র। সেই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যের প্রায় ২৯ লক্ষ গ্রাহকের ৭০% নিয়মিত সিলিন্ডার কিনছেন। গোটা দেশে সেই হার অবশ্য প্রায় ৮৫%। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির দাবি, মূলত এই প্রকল্পের হাত ধরেই দেশে রান্নার গ্যাসের সংযোগ ক্রমশ বাড়ছে। উল্লেখ্য, ২০১৮-’১৯ সালের মধ্যে ভারতে ৯৫% পরিবারেই এলপিজি সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র।
এ রাজ্যে পিএমইউওয়াই চালু হয় গত অগস্টে। ২০১১-এ কেন্দ্রের ‘সোশিও ইকনমিক কাস্ট সেনসাস’ (এসইসিসি) বা আর্থ-সামাজিক বিন্যাস মেনে করা জনগণনায় নথিভুক্ত বিপিএল পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ না-থাকলে তাদের একজন মহিলা সদস্য এই প্রকল্পের সুবিধা পান। তবে ওই তালিকায় নাম না-থাকলে শুধু বিপিএল কার্ড দিয়ে এই সুবিধা মিলবে না। সোমবার হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (এইচপি)-এর অফিসাররা জানান, এসইসিসি তালিকায় থাকা এ রাজ্যের ১.১৭ কোটি পরিবারের মধ্যে ২০১৬-’১৭ সালে এইচপি, ইন্ডেন এবং ভারত গ্যাস মোট ২৯ লক্ষ মহিলাকে ওই সংযোগ দিয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছিল, বিপিএল তালিকাভুক্ত ক’জন দাম দিয়ে নিয়মিত এই সিলিন্ডার কিনতে পারবেন? পূর্বা়ঞ্চলে এইচপি-র এই প্রকল্পের ম্যানেজার সুচরিতা সাহা, জেলার নোডাল অফিসার সিদ্ধানাথ ঝা-র দাবি, ওই সংযোগ নেওয়া গ্রাহকদের মধ্যে ৭০% নিয়মিত সিলিন্ডার কিনছেন। এবং এখনও পর্যন্ত তাঁরা গড়ে ৩-৪টি সিলিন্ডার কিনেছেন। তবে সিলিন্ডার কিনলেও এখনও অনেকেই কাঠের উনুনের মতো বিকল্প ব্যবস্থা চালু রেখেছেন। যা বন্ধ করা তাঁদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ বলে মানছেন তাঁরা।
তাঁদের হিসেবে, কয়েকটি জেলায় নতুন সংযোগের পরিসংখ্যান এই রকম: উত্তর ২৪ পরগনা ২.১৪ লক্ষ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ২.৯৩ লক্ষ, পশ্চিম মেদিনীপুর ২.৫৭ লক্ষ, কোচবিহার ২.২৩ লক্ষ, কলকাতা ৮৭০০।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে সংযোগ নেওয়ার সময়ে ১৬০০ টাকার ভর্তুকি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্টোভ ও প্রথম সিলিন্ডারের টাকা ঋণে নেওয়ার সুযোগ পাবেন গ্রাহক। এর পর অবশ্য প্রতি বার বাজার দরেই তাঁকে সিলিন্ডার কিনতে হবে। বছরে ১২টি সিলিন্ডারের ভর্তুকি তাঁর ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে যাবে।