প্রতীকী ছবি।
করোনাকে আটকাতে যখন গোটা দেশ ঘরবন্দি ছিল, মোবাইলই হয়েছে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা। অফিসের কাজকর্ম, স্কুল-কলেজের পড়াশোনায় অপরিহার্য হয়েছে ফোন। তবে টেলিকম সংস্থাগুলির সঙ্কট কমেনি। শিল্পের অভিযোগ, সস্তার মাসুল যুদ্ধ বছরখানেক ধরে তাদের আর্থিক বোঝা বাড়ানোয় এই দশা। সুদিন ফিরে পেতে টেলিকম মহলের চোখ এখন বাজেটে। বিভিন্ন লাইসেন্স ফি থেকে শুরু করে স্পেকট্রাম ব্যবহারের চার্জের মতো বিভিন্ন সরকারি মাসুল কমানো, কর ব্যবস্থার সরলীকরণ-সহ একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআই এবং টাওয়ার সংস্থাগুলির সংগঠন টাইপা।
সিওএআইয়ের ডিজি এসপি কোছার ও টাইপার ডিজি টি আর দুয়ারের সওয়াল, দেশের অর্থনীতির জন্য টেলিকম শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানো জরুরি। গত দু’দশকে যে শিল্প প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির অন্যতম গন্তব্য ছিল। এখনও পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে লগ্নি হয়েছে মোট ১১.২৪ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু স্পেকট্রাম নিলামেই তারা খরচ করেছে ৩.৬৮ লক্ষ কোটি। আর এই ক্ষেত্রের মাধ্যমে রাজকোষে এসেছে বার্যিক প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তাঁদের দাবি, এখন সময়টা কঠিন। অথচ পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, নতুন স্পেকট্রামের নিলাম, ৫জি প্রযুক্তির প্রচলন, বিপুল অপটিক্যাল ফাইবার পাততে বিপুল লগ্নি জরুরি। চাই নতুন পরিকাঠামো। কিন্তু সংস্থাগুলি আর্থিক বোঝায় কাহিল। সেই হারে বাড়েনি মাসুল। তাই সরকারি সাহায্য ছাড়া পথ নেই।
বস্তুত, টেলি শিল্পের লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম ব্যবহারের খরচ কমানোর আর্জি দীর্ঘ দিনের। সিওএআইয়ের মতে, পরিষেবার আওতার বাইরে থাকা এলাকায় ঢুকতে মোট লাইসেন্স ফি-র (৮%) মধ্যে ৫% যায় সে জন্য গড়া বিশেষ তহবিলে। এত দিনের অর্থে যে তহবিল গড়া হয়েছে তাতে এখন আর নতুন করে অর্থ জোগানের দরকার নেই। তাই সেই ফি হ্রাসের আর্জি জানিয়েছে তারা।
শিল্পের আরও দাবি, টাওয়ার পরিকাঠামোয় যন্ত্রাংশের জন্য মেটানো করের টাকা ফেরতের সুবিধা না-থাকায় অসুবিধায় পড়ছে সংস্থাগুলি। অথচ বাড়ি থেকে কাজের জন্য এবং ৪জি, ৫জি-র জন্য আরও টাওয়ার নির্মাণ জরুরি। যা আর্থিক সমস্যায় ধাক্কা খাচ্ছে। শিল্পের দাবি, ৮৫% যন্ত্রাংশই আমদানি নির্ভর। তার উপরে ন্যূনতম ২০% শুল্ক বসে। যতক্ষণ না দেশেই এই প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে, ততদিন শুল্ক কম থাকুক।