প্রতিবাদ: হাওড়ার এক পেট্রল পাম্পে আলো নিভিয়ে প্রতীকী বিক্ষোভ।
ডিজ়েলের দর কলকাতায় লিটার পিছু ১০০ টাকা পেরিয়েছিল গতকাল। আজ, শুক্রবার পেট্রল পেরোল ১০৯ টাকার গণ্ডি। আইওসি-র পাম্পে ৩৪ পয়সা বেড়ে তা বিকোচ্ছে ১০৯.১২ টাকায়। ডিজ়েল আরও ৩৫ পয়সা বেড়ে পৌঁছেছে ১০০.৪৯ টাকায়।
তবে দুর্ভোগ যে এখানেই থামছে না, তার ইঙ্গিত দিয়েছে উপদেষ্টা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স। এক রিপোর্টে তাদের অনুমান, আগামী বছর ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম ১৫০ টাকার কাছে পৌঁছতে পারে। কারণ বিশ্ব জুড়ে তেলের চাহিদা বাড়লেও জোগান কম হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেল (ব্রেন্ট ক্রুড) প্রায় ৩০% লাফিয়ে ১১০ ডলার ছুঁতে পারে। গোল্ডম্যানের আশঙ্কা, দেশে তার প্রভাব পড়লে এক লিটার পেট্রল উঠতে পারে ১৫০ টাকায়, ডিজ়েল ১৪০ টাকার কাছে। বৃহস্পতিবার রাতে অবশ্য ব্রেন্ট ক্রুডের দর ৮৪ ডলারের নীচে ছিল।
গতকাল কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার আরও কিছু শহরে ডিজ়েল সেঞ্চুরি করে। জিনিসপত্রের চড়া দামে খাবি খাওয়া সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের পাশে কেউ নেই।’’ তেতে পাম্প মালিকেরা। তাঁদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, দামের জেরে তেল বিক্রি কমায় পাম্পের আয় কমছে। প্রতিবাদ জানাতে রাজ্যে যে সব জায়গায় এ দিন ডিজ়েল১০০ টাকা পেরিয়েছে, সেখানে সন্ধ্যেয় আধ ঘণ্টা (৭টা থেকে ৭.৩০) পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রাখে তারা। সব আলো নিভিয়ে ডিলাররা কালো ব্যাজ পরে প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হন। জ্বালানির কারণেই রাস্তায় গণপরিবহণ কম, মানছেন শহরের বিভিন্ন বাস মালিকদের সংগঠনের একাংশ। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘তেলের যা দাম, খরচই তো উঠছে না, বাস চলবে কী করে? সন্ধ্যের পরে যাত্রীও না-থাকায় মালিকেরা গাড়ি চালাতে চাইছেন না।’’
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে ডিজ়েল লিটারে ১০০.১০ টাকা হয়, ডায়মন্ড হারবারে ১০০.১৪ টাকা, বাঁকুড়া শহরে ১০০.২৯ টাকা। দুর্গাপুরে ভারত পেট্রোলিয়ামের পাম্পে দর ১০০ টাকা ছাড়ালেও ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে ছিল ৯৯.৯৯ টাকা। আজ দাম আরও বেড়েছে। গতকাল দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে জলপাইগুড়ি এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষ। ডিজ়েলের দাম নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে তাঁরা বলেন, ‘‘এ সব আর এখন খবর নয়। আগেই হয়েছে।’’ তারপরে অবশ্য সেগুলিকে জিএসটির আওতায় আনার প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যকে বিঁধেছেন তাঁরা।