উৎসবের মরসুমে ভাল বিক্রির মুখ দেখেছিল গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলি। সেই ধারা বজায় রেখে নভেম্বরেও যাত্রী গাড়ি বিক্রি বাড়াতে সক্ষম হল বেশ কিছু সংস্থা। এই সময়ে ১০ শতাংশেরও বেশি বিক্রি বাড়িয়েছে মারুতি-সুজুকি, হুন্ডাই মোটর, মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রা ও ফোর্ডের মতো সংস্থা। তবে বিক্রি কমেছে টাটা মোটরস, হোন্ডা কারস ইন্ডিয়া, টয়োটা কির্লোস্করের।
দেশের বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা সংস্থা মারুতি-সুজুকি জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে দেশে তাদের বিক্রি ১০.৬% বেড়ে হয়েছে ১,১০,৫৯৯টি। অল্টো, ওয়াগন-আরের মতো ছোট গাড়ি বিক্রি কমলেও (৪.৭%), এস্টিলো, রিৎজ, ডিজায়ার এবং সদ্য বাজারে আসা বালেনোর বিক্রি বৃদ্ধির হার ১৯.৫%।
হুন্ডাইয়ের বিক্রি বেড়েছে ২৩%। দাঁড়িয়েছে, ৪৩,৬৫১টিতে। সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিক্রি ও বিপণন) রাকেশ শ্রীবাস্তব বলেন, গ্র্যান্ড আই ১০, ক্রেটা, আই ২০-র মতো গাড়িগুলি তরুণ ক্রেতাদের কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। আর তার হাত ধরেই বিক্রি বেড়েছে সংস্থার। ফোর্ডের ক্ষেত্রে বিক্রি প্রায় ৫৫% বেড়ে হয়েছে ৮,৭৭৩টি। একই ভাবে ছোট গাড়ি কুইডের হাত ধরে বিক্রি দ্বিগুণেরও বেশি বাড়াতে পেরেছে ফরাসি গাড়ি নির্মাতা রেনো।
এ দিকে, গত কয়েক মাসে খুব একটা ভাল ফল না-করলেও, নভেম্বরে বিক্রি অনেকটাই বেড়েছে মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রার। বিশেষত উৎসবের মরসুম, সুদের হার কম থাকা এবং নতুন গাড়ি বাজারে আনাই যার কারণ বলে জানিয়েছেন সংস্থার চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার প্রবীণ শাহ। এই সময়ে তাদের বিক্রি ২৩% বেড়ে হয়েছে ৩৯,৩৮৩টি। আগামী দিনে পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে ভারতের গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলি উপকৃত হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে নভেম্বরে বিক্রি কমেছে টাটা মোটরসের। এই সময়ে তাদের দেশে তাদের যাত্রী গাড়ি বিক্রি প্রায় ৭% কমে হয়েছে ৩৮,৯১৮টি। ইউটিলিটি ভেহিক্ল এবং বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রেও খারাপ ফল দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থা। একই ভাবে হোন্ডার বিক্রি কমেছে ৩.৬১%। দাঁড়িয়েছে ১৪,৭১২টিতে। টয়োটা কির্লোস্করের ক্ষেত্রে তা কমেছে সাড়ে ১৫ শতাংশের বেশি। নভেম্বরে দেশের বাজারে ১০,২৭৮টি গাড়ি বিক্রি করেছে তারা।
গাড়ি বিশেষজ্ঞ এবং প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্সের পার্টনার আবদুল মজিদের মতে, নতুন গাড়ি আনা, কম সুদের হার, পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমা এবং গাড়ির চাহিদা বাড়া এই শিল্পের পক্ষে ভাল খবর। আগামী দিনে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হাত ধরে গাড়ি শিল্পেও গতি আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে এর মধ্যেই গ্রামাঞ্চলে সে রকম চাহিদা না-থাকা এবং মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়ার প্রবণতা এই শিল্পকে সমস্যায় ফেলতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।