প্রতীকী ছবি।
সানন্দে টাটাদের সস্তার গাড়ি তৈরির কারখানাই এখন তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির আঁতুড়ঘর। কেন্দ্রের কাছ থেকে সংস্থা ওই গাড়ির বরাত জেতার পরে যার গুরুত্ব আগামী দিনে আরও বাড়ার সম্ভাবনা।
জমি-জটের জেরে সিঙ্গুর থেকে বিদায়ের পরে গুজরাতের সানন্দে ‘ঘর পেয়েছিল’ ন্যানো। ঠিক হয়েছিল সেখানেই ওই সস্তার গাড়ি তৈরি করবে টাটারা। কিন্তু প্রত্যাশা যতখানি ছিল, বাজারে ন্যানো সে ভাবে চলেনি। তাই তারা সেখানে ব্যবসা কৌশল কিছুটা বদলেছে। সানন্দের কারখানায় ছোট গাড়ি ‘টিয়াগো’ ও সেডান ‘টিগর’ তৈরির পাশাপাশি এখন বৈদ্যুতিক ‘টিগর’ও তৈরি করছে তারা।
গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়ামের হিসেব, সেপ্টেম্বরে ৮,৩১৬ টিয়াগো, ১,৭৭০ টিগর ও ১২৪টি ন্যানো বিক্রি হয়েছে ওই কারখানা থেকে। সবই অবশ্য প্রথাগত জ্বালানির। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক টিগর-ও।
এই তথ্য বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে, কারণ জ্বালানিতে আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবং দূষণ রুখতে দেশের রাস্তা দ্রুত বৈদ্যুতিক গাড়িতে ছেয়ে দেওয়ার কথা বলছে কেন্দ্র। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থা এনার্জি এফিশিয়েন্সি সার্ভিসেসের (ইইএসএল) কাছে বরাতও পেয়েছে টাটারা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও দফতরে চালু পেট্রোল-ডিজেল গাড়িগুলিকে বদলে ধাপে-ধাপে বৈদ্যুতিক গাড়ি চালুর জন্য ১০ হাজার বৈদ্যুতিক সেডানের দরপত্র চেয়েছিল ইইএসএল। মহীন্দ্রা, নিসানকে হারিয়ে সেই বরাত টাটারাই পেয়েছে। এ মাসে প্রথম পর্যায়ের ২৫০টি বৈদ্যুতিক টিগর জোগানোরও কথা তাদের। যা তৈরি হচ্ছে সানন্দে।
বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা গাড়ি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তৈরি ন্যানো বাজারে সে ভাবে কল্কে না-পাওয়ায়, আলোচনা হয়েছে বিস্তর। তা চর্চার বিষয় হয়েছে রাজনৈতিক তরজারও। যেমন, ভোটমুখী গুজরাতে বিজেপিকে বিঁধে রাহুল গাঁধী বলেছেন, ন্যানো সে ভাবে রাস্তায় চলে কোথায়? গাড়ি শিল্পের এক কর্তার মতে, বিতর্ককে পাশে রেখে নিঃশব্দে সানন্দ কারখানাকে তৈরি করে গিয়েছে টাটারা। নতুন প্রজন্মের গাড়ি তৈরির পরে লগ্নি হয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্যও। তাই বরাত জিততে এগিয়ে থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে।
টাটা মোটরস অবশ্য কোনও প্রকল্প বা সানন্দে লগ্নি নিয়ে মুখ খোলেনি। সংস্থার মুখপাত্র জানান, কেন্দ্রের উদ্যোগে সামিল হয়ে তাঁরা গর্বিত। ওই দরপত্রে অংশ নেওয়ার ভাবনা বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবসায় তাদের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনারই প্রতিফলন।