উত্তরবঙ্গের চা বাগান ও কমলালেবু বাগানগুলিতে কীটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এর ফলে মাটির গুণমান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি চায়ের স্বাদেরও অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে না গাছ। এই পরিস্থিতিতে বাগানগুলিতে জৈব সারের ব্যবহার যাতে বাড়ে, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হল সরকার। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের তত্ত্বাবধানে কেঁচো দিয়ে মাটির সার তৈরি হচ্ছে। আপাতত জলপাইগুড়িতে শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের বাগানগুলিতে রাসায়নিক সারের বদলে এই ধরনের সারের চাহিদা বেড়েছে। শুধু জলপাইগুড়ি জেলাতেই ৬০ হাজার টন এই ধরনের সার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের উপরে নির্ভর করে কর্মসংস্থানও বাড়বে বলে আশা পর্ষদের।
পর্ষদের সিইও মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ময়নাগুড়ির রথেরহাটে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানেই তৈরি হয়েছে সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র (কমন ফেসিলিটি সেন্টার)। পর্ষদ ঠিক করেছে, মাটি, গোবর ও কেঁচো দিয়ে তৈরি এই সার সংগ্রহ করা হবে স্থানীয় মানুষদের কাছ থেকেই। তার পর তা মোড়কবন্দি করে বিভিন্ন বাগানে বিক্রি করা হবে। এই ধরনের ১৩০টি পরিবারকে নিয়ে একটি সমিতিও গঠন করে দেওয়া হয়েছে বলে মৃত্যুঞ্জয় জানান।
সূত্রের খবর, আগ্রহী পরিবারগুলিকে পর্ষদের পক্ষ থেকেই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তিন-চারটি করে পাকা চৌবাচ্চা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই মাটি, গোবর-সহ অন্যান্য জৈব পদার্থের সাহায্যে তৈরি হচ্ছে সার। এর জন্য পরিবারগুলিকে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ। প্রাথমিক ভাবে খরচ হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা।
পর্ষদের পরিকল্পনা বিভাগের অন্যতম কর্তা বিশ্বজিৎ সরকার জানিয়েছেন, এই ধরনের সার উৎপাদনের জন্য মিরিক-সহ আরও কয়েকটি জায়গা থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন তাঁরা। সার কেনার জন্য যোগাযোগ করছে বাগানগুলিও।