ঘাড়ে চেপে থাকা ঋণের বিপুল বোঝা হাল্কা করতে দীর্ঘ মেয়াদে তা ঢেলে সাজানোর দাবি বার বার তোলে রাজ্য। বলে করের ভাগ হিসেবে আরও বেশি টাকা তাদের হাতে দেওয়া এবং পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) সরলিকরণের কথা। এ বার রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘সুর মিলিয়ে’ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সামনে এই সমস্ত দাবিদাওয়া পেশ করল বাম-সহ বিরোধী দলগুলি।
সোমবার চেয়ারম্যান এন কে সিংহের নেতৃত্বে নবান্নে বৈঠকে বসেন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সেখানেই তাঁদের সামনে এই দাবিগুলি তুলে ধরেন বিরোধী নেতারা। সেখানে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত বলেন, বাম জামানার শেষ দিকে রাজ্যের মোট ঋণ ছিল ১.৯২ লক্ষ কোটি টাকা। যা এখন বেড়ে ৩.৯৭ লক্ষ কোটি হয়েছে। তাঁর দাবি, বাম আমলে কেন্দ্র আলোচনা না করেই স্বল্প সঞ্চয় থেকে নেওয়া অর্থের ৮০% ঋণ হিসেবে দেখিয়ে দিত। ঋণের বোঝা হাল্কা করতে তা ঢেলে সাজানোর পক্ষে সওয়াল করেন বিরোধী নেতারাও। যে দাবিতে আজ দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্য সরব। ঋণ পুনর্গঠন ও কেন্দ্রের তরফে আরও বেশি করের ভাগ পাওয়ার কথা বার বার বলে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, এই মুহূর্তে সারা দেশে কেন্দ্র যে কর আদায় করে, তার ৪২% পায় রাজ্যগুলি। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ৭.৩%। এ দিন কমিশনের কাছে রাজ্যগুলির ভাগ বাড়িয়ে ৫০% করার দাবি তোলা হয়েছে বলে জানান অসীমবাবু। একই দাবি কংগ্রেসেরও।
তবে উল্টো দিকে, রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে সমস্ত রাজ্যই যাতে দায়িত্বশীল হয়, সেটি নিশ্চিত করতে চায় কমিশন। এ দিন বণিকসভার অনুষ্ঠানে সিংহের ইঙ্গিত, যে সমস্ত রাজ্য ঘাটতির ঊর্ধ্বসীমার কাছাকাছি, কৃষিঋণ মকুবের মতো জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণার আগে কেন্দ্রের কাছে অনুমতি নিতে হবে তাদের। যাতে ঘাটতি মাত্রাছাড়া না হয়। এ বিষয়ে নীতি নির্ধারণের খসড়া তৈরি করবে অর্থ কমিশনই।
নবান্ন সূত্রে খবর, আজ মঙ্গলবার কমিশনের সামনে রাজ্যের আর্থ-সামাজিক ছবি তুলে ধরবে সরকার। বৈঠকে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীও।