প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির মসনদে বসেছিলেন তিনি। আরও একটি লোকসভা ভোটের মুখে উঠে এল উল্টো ছবি। উপদেষ্টা সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে প্রকাশ, দেশে গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে ২০-২৪ বছর বয়সিদের মধ্যে বেকারত্বের হার বিপুল বেড়েছে। পেরিয়ে গিয়েছে ৪০%। এই হিসাব সামনে আসতেই উদ্বেগ বেড়েছে দেশ জুড়ে। বিরোধী শিবিরের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বছরে দু’কোটি কাজের প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে ‘কাজের খরা’-কে তাঁর ব্যর্থতার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছে কংগ্রেস।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্বের কাঁটা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে বিজেপির। জিনিসপত্র কিনতে যেখানে খরচ আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে, সেখানে এত মানুষের রোজগারের রাস্তাই নেই। সংসার খরচ সামলাতে গিয়ে একাংশের কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে খাদ্য-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের চড়া দরে। যা ক্ষোভ বাড়াচ্ছে আমজনতার। প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্র অর্থনীতির ছন্দে ফেরার কথা বললেও কাজে তার ছাপ কই?
সিএমআইই-র পরিসংখ্যান নিয়ে প্রকাশিত খবর তুলে ধরে ‘এক্স’-এ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, মোদী জমানার ১০ বছরে ভারতে ‘কাজের খরা’ আরও তীব্র হয়েছে। দুঃখজনক ভাবে প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের যুব সম্প্রদায়েরও উন্নতি করার অধিকার রয়েছে। যা তাঁদের দিতে পারে ভাল মানের কাজ, কর্মহীনতা বা ‘পকোড়া’র দোকান নয়।’’
দেশে অল্প বয়সিদের মধ্যে আবার বেকারত্বের হার চড়ছে বলে দাবি করেছে সিএমআইই। রমেশ এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, এই উপদেষ্টা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ডিসেম্বরে (অক্টোবর-ডিসেম্বরে) ২০-২৪ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে বেকারত্বে হার পৌঁছে গিয়েছে ৪৫.৫ শতাংশে। ২৫-২৯ বছর বয়সের চাকরিপ্রার্থীদের নিরিখে তা ১৫.৫%, প্রায় চার বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি। ৩০-৩৪ বছর বয়সিদের মধ্যেও তিন বছরে সর্বোচ্চ। কংগ্রেস নেতার দাবি, এর মানে কোভিডের সময়ের থেকেও খারাপ হয়েছে কাজের বাজারের পরিস্থিতি। বেকারত্ব আরও বেড়েছে।
সিএমআইই-র রিপোর্ট বলেছে, ধাক্কা এসেছে মূলত গ্রামাঞ্চলের থেকে। শহুরে এলাকার তুলনায় কর্মহীন মানুষের হার বেড়েছে সেখানে। জুলাই-সেপ্টেম্বরের থেকে অক্টোবর-ডিসেম্বরে বেকারত্ব অনেক বেশি চড়া। ২০-২৪ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে তা ৪৩.৭৯%, ২৫-২৯ বছর বয়সিদের ১৩.০৬% আর ৩০-৩৪ বয়সিদের মধ্যে ২.২৪%। বরং শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার কিছুটা কমেছে তার আগের তিন মাসের থেকে। যদিও ২০-২৪ বয়সিদের ক্ষেত্রে সেখানেও তা ৪০ শতাংশের বেশি (৪৫.৯৮%)। তার আগে ছিল ৪৭.৬১%।
এ দিন বিরোধী শিবিরের তোপ, বিশেষত গ্রামীণ ভারতের অবস্থা বেশ খারাপ। সকলেই ১০০ দিনের কাজের দিকে ঝুঁকছেন। কারণ বাজারে অন্য কোনও চাকরি নেই। একাংশের ক্ষোভ, কিছু মানুষের অর্থ ও কাজ কিছুই নেই। বিত্তবানের সম্পদ বাড়ছে।