কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
অতিমারির পরে জাতীয় অর্থনীতিকে মন্দার খাদ থেকে উদ্ধার করে গতিশীল করতে ধারাবাহিক ভাবে যে ক্ষেত্রটির উপরে কেন্দ্র ভরসা করে আসছে, তা হল পরিকাঠামো। লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটেও তার ব্যতিক্রম হল না। বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানালেন, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য এই খাতে বরাদ্দ ১১% বাড়িয়ে ১১.১১ লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ মনে করাচ্ছে, গত বাজেটে চলতি অর্থবর্ষের জন্য পরিকাঠামোয় সরকারি মূলধনী খরচ বরাদ্দ করা হয়েছিল ১০ লক্ষ কোটি। বছরের শেষে খরচ সেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০,০০০ কোটি টাকা পিছনেই থমকে যেতে পারে। তা রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করবে ঠিকই, কিন্তু উদ্দেশ্য পূরণ পুরোপুরি হবে না। তবে নির্মলার যুক্তি, অবশেষে বেসরকারি লগ্নিতে গতি ফিরছে।
অর্থনীতির চাকায় গতি ফিরে বাজারে বিক্রি বাড়লেও বেসরকারি লগ্নি অনেক দিন ধরেই নিশ্চুপ। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা আবেদন জানালেও প্রত্যাশিত ভাবে হাত খোলেনি তারা। সে কারণে অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে ক্রমাগত সরকারি খরচ বাড়াতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়ানোও যার লক্ষ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১০ লক্ষ কোটি টাকা করেছিলেন নির্মলা। তার আগের বাজেটগুলিতেও শতাংশের হিসাবে খরচ বেড়েছিল সে ভাবেই। সেই অর্থে এ বারের বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির হার কম (১১%)। নির্মলার দাবি, আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সম্প্রতি বেসরকারি লগ্নিতেও গতি আসছে। বিশেষ করে ইস্পাত, সিমেন্ট এবং পেট্রলিয়ামে। সে কারণেই বরাদ্দ বৃদ্ধির হার কিছুটা কমানো হল।
এ দিন বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা বলেছেন, ‘‘বেসরকারি লগ্নি এখন উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকার কম ঋণ নেওয়ার ফলে বেসরকারি ক্ষেত্রের হাতে আরও বেশি ঋণ নেওয়ার সুযোগ বাড়বে।... গত চার বছরে বিপুল মূলধনী খরচের প্রভাব আর্থিক বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের উপরে পড়েছে। আগামী অর্থবর্ষে এই খাতে খরচ ১১.১% বাড়িয়ে ১১,১১,১১১ কোটি টাকা করা হল। যা জিডিপির ৩.৪%।’’ বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, অতিমারির পর থেকেই মূলধনী খরচে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। বৃদ্ধির হারকে ৭ শতাংশে তুলে আনতে তা সাহায্যও করেছে।