হাসিমুখ: কলকাতায় টাটা-কর্তা চন্দ্রশেখরন। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে কোনও তিক্ততা নেই। ভাল সম্পর্ক ‘দিদি’-র সঙ্গেও। টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হওয়ার পরে টাটা গ্লোবাল বেভারেজেসের (টিজিবিএল) বার্ষিক সভায় যোগ দিতে শুক্রবার প্রথম বার কলকাতায় এসে রাজ্য ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এই বার্তাই দিলেন এন চন্দ্রশেখরন।
যদিও এর বাইরে রাজ্যে টাটাদের লগ্নির সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর বার্তা, দুই পূর্বসূরি রতন টাটা ও সাইরাস মিস্ত্রির বক্তব্যেরই অনুরণন। যেখানে পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের বড়সড় উপস্থিতির উদাহরণ টেনে চন্দ্রশেখরন জানান, সুযোগ এলে নতুন লগ্নির কথা ভাববেন।
সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায়ের পর থেকে বহু দিন রাজ্যের সঙ্গে চাপান-উতোর চলেছে তাদের। যার পরিপ্রেক্ষিতে এখানে ওই গোষ্ঠী আগামী দিনে আর পুঁজি ঢালতে চাইবে কি না, সেই প্রসঙ্গ উঠেছে বারবার। বিশেষত টিজিবিএল-এর ‘রেজিস্টার্ড অফিস’ কলকাতা হওয়ায়, তাদের বার্ষিক সভায় এসে টাটার শীর্ষ কর্তা হিসেবে অনেক বার ওই প্রশ্নের মুখে পড়েন রতন টাটা ও সাইরাস মিস্ত্রি।
এ দিনও ওঠা সেই প্রশ্নের জবাবে নতুন চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কলকাতায় আমাদের উপস্থিতি যথেষ্ট। টিসিএস, টাটা স্টিল, টাটা ক্যানসার হাসপাতাল, টিজিবিএল-সহ বহু সংস্থাই রয়েছে। এখানকার প্রতি দায়বদ্ধ আমরা। সঠিক সুযোগ এলে এখানে লগ্নি করার কথা নিশ্চয়ই ভাবব।’’
এ দিন সভার শেষে হোটেল ছেড়ে বেরোনোর সময় রাজ্যের প্রতি তাঁর বার্তা কী জানতে চাওয়া হলে, চন্দ্রশেখরন বলেন, ‘‘আমি দিদিকে ভাল চিনি। সম্পর্ক ভাল। ওঁর সঙ্গে দেখাও করেছি।’’ আর বর্তমান রাজ্য সরকার ও টাটা গোষ্ঠীর মধ্যে তিক্ততা নিয়ে জল্পনা প্রসঙ্গে তাঁর উত্তর, ‘‘কোনও তিক্ততা নেই।’’ তবে এ সবের বাইরে আগের কয়েক বছরের তুলনায় নতুন কোনও আশার কথা শোনা যায়নি তাঁর বক্তব্যেও।
সিঙ্গুরের বিতর্ক চলাকালীনই তৎকালীন চেয়ারম্যান রতন টাটা সুযোগ এলে লগ্নির কথা বলেছিলেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত মিস্ত্রিও জানিয়েছিলেন, রাজ্যের প্রতি টাটাদের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণ নেই। লগ্নি করা হবে সম্ভাবনার ভিত্তিতে। বলেছিলেন, সুযোগ এলে টাকা ঢালার কথা ভাববেন, রাজনৈতিক পরিবেশ যা-ই হোক। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ দিন সেই পথে হেঁটেছেন চন্দ্রশেখরনও।