প্রতীকী ছবি।
চড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে চলতি বছরে ভারতের (২০২২) আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটল উপদেষ্টা সংস্থা মুডি’জ়। পরিস্থিতি ঘোরালো হওয়ায় ওই হার ৯.১% থেকে ৮.৮ শতাংশে নামাল তারা। বৃহস্পতিবার মুডি’জ় জানিয়েছে, অতিমারির পরে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া একগুচ্ছ জটিল চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব জুড়েই। ফলে ভারতেও আর্থিক বৃদ্ধি খানিকটা ধাক্কা খাবে। এ দিনই স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদদের দাবি, গত জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ২.৭%। আর ৩১ মার্চ শেষ হওয়া পুরো অর্থবর্ষে ৮.৫%।
বাজারে মূল্যবৃদ্ধির আঁচ যত বাড়ছে, তত অর্থনীতির টুঁটি টিপে ধরছে বৃদ্ধির গতি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা। একের পর এক আর্থিক এবং উপদেষ্টা সংস্থা দেশে জিডিপি বৃদ্ধির প্রত্যাশিত হার সম্পর্কে নিজেদের দেওয়া পূর্বাভাস কাটছাঁট করছে। ইতিমধ্যেই এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস, রাষ্ট্রপুঞ্জ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ, এডিবি, এমনকি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক পর্যন্ত সেই পথে হেঁটেছে। এ বার পা মেলাল মুডি’জ়।
মুডি’জ়-এর বক্তব্য, জোগান সঙ্কট, অশোধিত তেল, খাদ্য এবং সারের মতো পণ্যের চড়া দাম সাধারণ মানুষের সংসার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। কমিয়েছে ক্রয়ক্ষমতা। ফলে আশঙ্কা, আগামী মাসগুলিতে তাঁরা খরচ কমাবেন। তার উপরে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে সুদের হার বাড়ানো শুরু হয়েছে। এতে চাহিদা বৃদ্ধির গতি ঢিমে হবে। যা করোনাকালে তলিয়ে যাওয়ার পরে হালে কিছুটা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল। সব মিলিয়ে অর্থনীতির এগিয়ে চলার গতি শ্লথ হওয়ার সম্ভাবনা থাকছেই।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, যে চাহিদায় ভর করে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ছিল, তাকেই দুর্বল করতে হচ্ছে দামের চাপ কমাতে। ফলে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না। এর আগে ব্রোকারেজ সংস্থা ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা সিকিউরিটিজ় জানিয়েছে, সার, জ্বালানি, বিদ্যুতের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষের খরচ বাড়ছে। যা ধাক্কা দিতে পারে গ্রামীণ চাহিদাকে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের আশঙ্কা, এমন সমস্ত বহুমুখী সমস্যা বজায় থাকলে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ভবিষ্যতে আরও কমতে পারে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।