টাকায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের চেষ্টা স্থগিত করে দিল রাশিয়া এবং ভারত ফাইল ছবি।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর কারণে পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল ও কয়লার মতো পণ্য আনার সুবিধা পাচ্ছে ভারত। এই অবস্থায় আমদানিকারীরা তাকিয়েছিল দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য টাকায় চালানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার দিকে। কারণ এই ব্যবস্থা মুদ্রায় রূপান্তরের খরচ কমাতে সাহায্য করবে। মজবুত হবে টাকা। কিন্তু একাধিক সরকারি সূত্রের দাবি, বিষয়টি নিয়ে মাসের পর মাস আলোচনার পরেও মস্কোকে তাদের রাজকোষে টাকা জমা রাখার সুবিধা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে দিল্লি। ফলে টাকায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের চেষ্টা স্থগিত করে দিল দু’দেশ। এই ঘটনা আমদানিকারীদের রাশিয়া থেকে সস্তায় পণ্য কেনার পথে বড় বাধা তৈরি করবে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
এক সূত্রের দাবি, রাশিয়া মনে করে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য চালু হলে বছরে উদ্বৃত্ত টাকার অঙ্ক ৪০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৩,২৭,১২০ কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যাবে। আর এত বেশি টাকায় তাদের সিন্দুক ভর্তি করা বাঞ্ছনীয় নয়। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বা রাশিয়ার সরকারি মহল অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করেনি। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, টাকা পুরোপুরি সোনা বা অন্যান্য দেশের মুদ্রায় রূপান্তরযোগ্য নয়। তার উপর আন্তর্জাতিক রফতানি বাজারে ভারতের দখল মাত্র ২%। আর এই বিষয়গুলিই অন্য দেশের হাতে ভারতীয় মুদ্রা জমা রাখার প্রয়োজনীয়তা ও ইচ্ছে কমিয়ে দিচ্ছে।
দু’দেশের আলোচনায় জড়িত দ্বিতীয় সরকারি সূত্রের খবর, রাশিয়া টাকায় স্বচ্ছন্দ বোধ করছে না। তারা চিনের ইউয়ান বা অন্য দেশের মুদ্রায় পণ্যের দাম নিতে আগ্রহী। তৃতীয় সূত্রের দাবি, ‘‘আমরা টাকায় বাণিজ্য নিয়ে আর চাপাচাপি করতে চাই না, ওই ব্যবস্থা কাজ করছে না। এই উদ্যোগ সফল করতে যা যা করা সম্ভব, সব করেছে ভারত। লাভ হয়নি।’’
এক কর্তার বক্তব্য, পরিকল্পনাটি বিফল হওয়ার পরে দু’দেশ ডলারের পরিবর্ত হিসেবে নতুন বিকল্পের খোঁজ শুরু করেছে। উল্লেখ্য, গত বছরফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরেই ভারত টাকায় বাণিজ্যের ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে। কথাবার্তাও চলতে থাকে মস্কোর সঙ্গে। কিন্তু কোনও চুক্তি হয়নি।