পূর্বে লগ্নির মুখ অসম, শিল্পকে বার্তা মোদীর

শিল্প টানতে এ ধরনের সম্মেলন অসমে এই প্রথম। সেখানে মুকেশ বলে গেলেন, তাঁদের মোবাইল পরিষেবা জিও-র কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অসম।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

স্বাগত: সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোদীকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। শনিবার গুয়াহাটিতে। ছবি: পিটিআই।

লগ্নির খোঁজে শিল্পের মন জিততে বড়সড় সম্মেলন (ভাইব্র্যান্ট গুজরাত) আয়োজনের রেওয়াজ শুরু হয়েছিল পশ্চিমে, সবরমতীর তীরে। শনিবার তার ছোঁয়াচ লাগল ব্রহ্মপুত্রের পাড়েও। অসম শিল্প সম্মেলনে এসে সে কথা জানিয়ে গেলেন রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ অম্বানী। যিনি গুজরাতে ওই সম্মেলনের ভগীরথ, সেই নরেন্দ্র মোদী বিজেপি শাসিত অসমে এসে দাবি করে গেলেন এই রাজ্যই এখন পূর্ব ভারতে বিনিয়োগের মুখ। প্রথম দিনেই সেখানে সই হল ১৬০টি মউ। জমা পড়ল মোট প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব। দেখা গেল, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে এমন বেশ কিছু নাম, কয়েক সপ্তাহ আগেই গঙ্গার তীরেও লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন যাঁরা।

Advertisement

শিল্প টানতে এ ধরনের সম্মেলন অসমে এই প্রথম। সেখানে মুকেশ বলে গেলেন, তাঁদের মোবাইল পরিষেবা জিও-র কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অসম। তিন বছরে পাঁচ দফা ঘোষণায় সেখানে ২,৫০০ কোটি টাকা ঢালার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। বললেন, “মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর নেতৃত্বে ভাইব্র্যান্ট গুজরাত শুরু হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতিতে সবরমতীর পাড় থেকে তা আজ ব্রহ্মপুত্রের তীরে পৌঁছেছে।” উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে এসেও ৫,০০০ কোটি লগ্নির কথা বলে গিয়েছেন তিনি।

প্রথম দিনেই...

Advertisement

রিলায়্যান্স গোষ্ঠী ২,৫০০

অয়েল ইন্ডিয়া ১০,০০০

ইন্দো-ইউকে ইনস্টিটিউট অব হেল্‌থ ২,৭০০

সেঞ্চুরি প্লাই ২,১০০

স্পাইসজেট ১,২৫০

ম্যাকলিওড রাসেল ৫০০

* লগ্নি প্রস্তাব কোটি টাকায়

• সব মিলিয়ে ১৬০টি সমঝোতা চুক্তি (মউ)।

মোট লগ্নি প্রস্তাব ৬৪,৩৮৬ কোটির

অসমে টাকা ঢালার কথা বলল পশ্চিমবঙ্গে সেই একই কথা দিয়ে যাওয়া স্পাইসজেটও। তাদের প্রস্তাব, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের রাজ্যে সি-প্লেন চালু করা। সঙ্গে কেন্দ্রের ‘উড়ান’ প্রকল্পের হাত ধরে ছোট শহরে বিমান পরিবহণ পরিষেবার বিস্তার।

লগ্নির প্রতিশ্রুতি এসেছে অয়েল ইন্ডিয়া, ইন্দো-ইউকে ইনস্টিটিউট অব হেল্‌থ, ইনফিনিটি গোষ্ঠী, ডালমিয়া ভারত সিমেন্ট ইত্যাদির কাছ থেকেও। পতঞ্জলি গোষ্ঠীর আচার্য বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, অসমে ইতিমধ্যেই ২,৫০০ কোটি লগ্নি করেছেন তাঁরা। আগামী দিনেও বিনিয়োগের অঙ্ক বাড়বে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বীজ ব্যাঙ্ক, কৃষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন জানান, হোটেল, শিক্ষা ক্ষেত্র, ১৮টি জেলায় ক্যানসার কেয়ার ইউনিট ইত্যাদি গড়তে অসমে বিপুল বিনিয়োগ করবেন তাঁরা। শিল্পপতিদের কেউ কেউ বললেন, অসমে জঙ্গি সমস্যা আর এখন নেই। তাই এখানে নির্ভয়ে টাকা ঢালতে পারেন শিল্পপতিরা।

এ ছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আদিত্য খেতান, হর্ষ নেওটিয়া, ক্যাপ্টেন গোপীনাথের মতো শিল্পপতি। ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেশ প্রভু, রবিশঙ্কর প্রসাদ। ছিলেন ১১টি দেশের মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতরা। পশ্চিমবঙ্গের সম্মেলনে কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রী অবশ্য আসেননি।

সম্মেলনে এসে মোদীর দাবি, সহজে ব্যবসা করার পরিবেশের নিরিখে (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) দেশের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে অসম। ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির প্রাণকেন্দ্রও এই রাজ্য। সেই প্রসঙ্গে বলেছেন ভূপেন হাজারিকার লেখা কবিতা। তুলে এনেছেন এখানে সড়ক ও রেলপথ পরিকাঠামো উন্নত করতে বিপুল বিনিয়োগের কথা। বলেছেন জাতীয় বাঁশ মিশনে স্থানীয়দের উপকৃত হওয়ার কথাও। বাঁশ ও কৃষিজ পণ্যে বিনিয়োগে জোর দেওয়ার কথা বলেন সোনোয়ালও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement