ছবি: সংগৃহীত
প্রথম দফার মতো দ্বিতীয় দফাতেও মোদী সরকার দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে। লক্ষ্য, দূষণের পাশাপাশি তেল আমদানির খরচ ছেঁটে রাজকোষের চাপ কমানো। লক্ষ্য পূরণের তাগিদে কেন্দ্র জানিয়েছে, এ বার ব্যাটারি ছাড়াও বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি ও নথিভুক্তি হবে। তাদের ধারণা, এতে এই গাড়ি কেনার খরচ কমায় বাড়বে চাহিদা।
তবে গাড়ি শিল্পের একাংশ বলছে, এই নীতি বিভ্রান্তিকর। ব্যাটারি জোগানের পরিকাঠামোই যেখানে সর্বত্র গড়ে ওঠেনি, সেখানে দাম কম পড়লেও ক্রেতা বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনবে কোন ভরসায়! তার উপর এখন ব্যাটারির ক্ষমতার হিসেবেই বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনলে ক্রেতা আর্থিক সুবিধা (ফেম প্রকল্প) পান। ফলে ব্যাটারি ছাড়া কিনলে, তা পাওয়ার কথা নয়। নতুন নীতিতে ক্রেতার লাভ নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে এই প্রশ্নেও।
হিরো ইলেকট্রিকের এমডি নবীন মুঞ্জল, আথার এনার্জির সিইও করুণ মেহতা ও কিনাওয়ার এমডি জিতেন্দ্র শর্মার মতো একাংশ অবশ্য নীতির প্রশংসা করে বলছেন, বৈদ্যুতিক গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়তে পারে এতে। কারণ, ব্যাটারির খরচের জন্যই এগুলির দাম অনেক বেশি।
যদিও মহীন্দ্রা ইলেকট্রিকের এমডি-সিইও মহেশবাবুর দাবি, বিশ্বে কোথাও ব্যাটারি ছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয় না। এই নীতি বিভ্রান্তিকর, সরকারকে জানাবেন। শিল্পের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর। নীতিটি ঘিরে ধোঁয়াশার অভিযোগ বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতাদের সংগঠন এসএমইভি-র ডিজি সোহিন্দর গিলেরও। বিষয়টির যথাযথ ব্যাখ্যা চাইছেন তাঁরা। প্রশ্ন তুলছেন, ক্রেতাকে তো ব্যাটারি ভাড়া নিতে হবে বা বদল করতে হবে। কিন্তু তা জোগানের সুবিধা সর্বত্র কোথায়? তবে তাঁদের মতে, গাড়ি সংস্থারই ব্যাটারির পরিকাঠামো থাকলে সমস্যা কমবে।
কেন্দ্রের ঘোষণা
• ব্যাটারি ছাড়াও বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি ও নথিভুক্ত (রেজিস্ট্রেশন) করা যাবে।
• নথিভুক্তির সময়ে ব্যাটারি কী ধরনের বা তার ‘টাইপ’ কী, উল্লেখ করতে হবে না।
• পরে ব্যাটারি সংস্থা বা বিদ্যুৎ সংস্থা ব্যাটারির জোগান দেবে।
• এতে গাড়ি কেনার খরচ অনেকটাই কমবে, কারণ ব্যাটারির খরচ প্রায় ৩০-৪০%।
• প্রচলিত ইঞ্জিনের (আইসিই) দুই ও তিন চাকার গাড়ির চেয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম
কম হবে।
• বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশ গড়তেই এই সিদ্ধান্ত।
গাড়ি শিল্পের প্রতিক্রিয়া
• ধোঁয়াশা কাটাতে নীতির আরও ব্যাখ্যা জরুরি।
• সুরক্ষার স্বার্থেই ব্যাটারি জুড়ে গোটা গাড়ি বিক্রি হয়।
• ভাড়া বা বদল (সোয়াপ) করে ব্যাটারির জোগান পেতে অসুবিধায় পড়বেন সাধারণ ক্রেতা।
• ব্যাটারি ছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক পরিবেশ গড়তে জরুরি আরও কিছু পদক্ষেপ। যেমন, ব্যাটারির জিএসটি ১৮% থেকে কমিয়ে ৫% করা। ব্যাটারিহীন গাড়িতেও বর্তমানে চালু ‘ফেম’ প্রকল্পের ভর্তুকি দেওয়া।