দেশের অভ্যন্তরে উড়ানের ক্ষেত্রে সংস্থাগুলির টিকিটের দাম বাড়িয়ে রাখা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার এ কথা জানান বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা। তিনি বলেন, মোদী-সহ সংসদের বেশির ভাগ সদস্যই বিষয়টি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। অবিলম্বে টিকিটের সর্বোচ্চ দাম বাঁধা নিয়ে সিদ্ধান্ত জরুরি বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি বিমান নীতি নিয়ে মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার সময়ই এই কথা ওঠে। বিমানযাত্রীদের মধ্যে অনেকেই চিকিৎসা বা অন্যান্য জরুরি কাজের জন্য শেষ মুহূর্তে টিকিট কাটেন। সে ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে যাত্রা করার জন্য তাঁদের বিপুল টাকা খরচ হয়। বিশেষত ব্যস্ত সময়ে সেই খরচ আরও বাড়ে। এই সময়ে সংস্থাগুলির দাম বাড়ানোর বদলে কমানো উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন শর্মা। এই পুরো বিষয়টি নিয়ে সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং তাদের বোঝানো হবে বলেও তাঁর দাবি। প্রয়োজনে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ এবং এয়ার ইন্ডিয়ার সাহায্যও নিতে পারে সরকার
উল্লেখ্য, এর আগে বিমান টিকিটের সর্বোচ্চ এবং ন্যূনতম দর বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছিলেন শর্মা নিজেও। পাশাপাশি, দর বেঁধে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছিল পর্যটন সংস্থাগুলির সংগঠন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স (আইএটিও)। সংগঠনের দাবি, বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি যাতে অত্যধিক দাম হাঁকতে না-পারে, তার জন্য ব্যবস্থা নিক কেন্দ্র। আইএটিও-র প্রেসিডেন্ট সুভাষ গয়াল জানিয়েছিলেন, সংস্থাগুলিকে যাত্রী বহনের খরচের তুলনায় কম দামে টিকিট দিতে বলা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু সেই দর যাতে কখনওই সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে না-চলে যায়, তা দেখতে হবে। বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি নিজেদের মধ্যে ব্যবস্থা করেই দাম বাড়িয়ে রাখে বলেও তাঁর দাবি। সেই বিষয়টিও সরকারকে খতিয়ে দেখতে বলে আইএটিও। যদিও, ২০১৪ সালে এক বছর ধরে করা এক সমীক্ষায় বিমান নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ জানিয়েছিল, দেশের ভিতরের উড়ানের ক্ষেত্রে টিকিটের দর এখনও যথেষ্ট কম।
এ দিকে, বিমান নীতি নিয়ে চূড়ান্ত করতে আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে বিমান টিকিটের উপর ২ শতাংশ হারে সেস বসানো হতে পারে বলে মন্ত্রক সূত্রে খবর। সেই টাকা দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তে বিমান পরিষেবা দেওয়া সংস্থাগুলিকে মূলধন হিসাবে দেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছে ওই সূত্র। পাশাপাশি, বিদেশে পরিষেবা দিতে এখন সংস্থাগুলিকে ৫ বছর ভারতে বিমান চালাতে হয়। এর সঙ্গেই সংস্থাগুলির হাতে কমপক্ষে ২০টি বিমান থাকতে হয়। নতুন নীতিতে এই নিয়মের কিছু পরিবর্তন হতে পারে বলে শর্মা জানিয়েছেন। তবে এই নিয়ম বদলের বিপক্ষেই মত দিয়েছে বিমান পরিষেবা সংস্থা ইন্ডিগো এবং জেট এয়ারওয়েজ। এর ফলে নতুন সংস্থাগুলি বাড়তি সুবিধা পাবে বলে তাদের দাবি।