প্রতীকী চিত্র।
বাকি ছিল চার। রাজ্যের সেই জেলাগুলিতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পরিকাঠামো গড়ার বরাত পেতে আগ্রহ প্রকাশ করল পাঁচ সংস্থা। সব শর্ত পূরণ করলেও শিকে অবশ্য ছিঁড়বে একটিরই ভাগ্যে। আর তার পরেই গোটা রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ পরিকাঠামোর (গ্যাস গ্রিড) বরাত দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে। পর্যায়ক্রমে পরিকাঠামো গড়ে সর্বত্র গ্যাসের জোগান চালু হতে অবশ্য সময় লাগবে আরও কয়েক বছর।
দেশ জুড়ে শিল্প, পরিবহণ ও রান্নার জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস বণ্টন এবং তার পরিকাঠামো (সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন) তৈরির জন্য পর্যায়ক্রমে দরপত্র চাওয়া হচ্ছে। ভৌগলিক এলাকা ভাগ করে বরাত দিচ্ছে এই ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস রেগুলেটরি বোর্ড (পিএনজিআরবি)। দরপত্র প্রক্রিয়ার ১১তম রাউন্ড পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্যও বরাত দেওয়া হয়েছে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি বণ্টন সংস্থাকে। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এ রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছিলেন। পরে ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রকল্পটি নিয়ে উদ্যোগী হন।
সম্প্রতি ১১এ রাউন্ডে পাঁচ রাজ্যের পাঁচটি অঞ্চলের জন্য দরপত্র চেয়েছিল পিএনজিআরবি। নিয়ন্ত্রক সূত্রের খবর, এগুলির মধ্যে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরকে নিয়ে একটি ভৌগলিক অঞ্চলের বরাত পেতে আগ্রহপ্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান অয়েল, গেল গ্যাস, টরেন্ট গ্যাস, হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম ও ভারত পেট্রোলিয়াম। গোটা প্রক্রিয়ায় এর পরেও কয়েকটি ধাপ রয়েছে। সমস্ত শর্ত পূরণ করার পরে একটি সংস্থাই সেই বরাত পাবে। তার পর আগামী কয়েক বছরে ধাপে ধাপে শুরু হবে গ্যাসের জোগান। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই প্রকল্প গতি আনবে রাজ্যের আর্থিক কর্মকাণ্ডেও।
এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যের বিভিন্ন ভৌগলিক অঞ্চলে আংশিক পরিকাঠামো তৈরি করে আপাতত গাড়ির জ্বালানি সিএনজি বিক্রি করছে ইন্ডিয়ান অয়েল আদানি গ্যাস (আইওএজিপিএল), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম এবং গেল ও গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের যৌথ সংস্থা বেঙ্গল গ্যাস (বিজিসিএল)। শিল্প ও রান্নার জ্বালানি হিসেবে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের পরিকাঠামোও গড়ছে তারা।
সর্বশেষ ১১এ রাউন্ডে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য মোট সাতটি সংস্থার ২১টি দরপত্র জমা পড়েছে। নিয়ন্ত্রক পিএনজিআরবির দাবি, এই রাউন্ড পর্যন্ত সব মিলিয়ে ভারতের ৮৮% ভৌগলিক অঞ্চল এবং ৯৮% মানুষের কাছে প্রাকৃতিক গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে তারা।