নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বর্ধমানের কাটোয়ায় প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার কাজ থেকে পিছু হঠেছে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত তাপবিদ্যুৎ সংস্থা এনটিপিসি। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে কারিগরি শিক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে তার কারণ নিয়ে কার্যত প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘোষণা, প্রায় ছ’শো একরের সেই জমিটি পড়ে রয়েছে। সেখানে যে কোনও ধরনের বড় শিল্প গড়তে আগ্রহী রাজ্য সরকার।
মমতা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে জমি চেয়েছিল, দিয়েছিলাম। তার পর হয়তো কোনও কিছুর জন্য প্রকল্প প্রত্যাহার করেছে, আমাদের জন্য নয়। হয়তো কোনও নির্দেশ (ইনস্ট্রাকশন) অনুযায়ী।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘ছ’শো একর জমি রয়েছে। এনটিপিসি এখন চলে গিয়েছে, নেয়নি। ওই জায়গাটা আমাদের পড়ে রয়েছে। সেখানে আমরা যে কোনও বড় শিল্প করতে পারি। কাটোয়া খুব জনপ্রিয় জায়গা।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রকল্পের জন্য পরিকাঠামোগত প্রায় পুরো ব্যবস্থাই হয়ে গিয়েছিল। তার পরে আগ্রহ হারায় এনটিপিসি। তাদের মনোভাব জেনে জমি ফিরিয়ে নেওয়ায় সম্মত হয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে প্রকল্পে লগ্নি করা টাকা সুদ-সহ ফেরত চেয়েছে সংস্থাটি। যদিও এ ব্যাপারে প্রশাসনিক সূত্রের অগ্রগতিস্পষ্ট হয়নি।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, তৃণমূল সরকারের সূচনালগ্ন থেকে বড় এবং উল্লেখযোগ্য এককালীন লগ্নিতে খরা কাটেনি এখনও। বড় শিল্পের জন্য বড় মাপের জমি প্রয়োজন। যা জোগাড় করা কঠিন। এই অবস্থায় কাটোয়ায় প্রায় ছ’শো একর জমি বড় শিল্পের সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিন তিনটি আর্থিক করিডর নিয়ে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান জেলায় জেলাশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, প্রকল্পের নির্মাণ সুগম রাখতে ওই জেলাশাসকদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রাখতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর করতে হবে বৈঠকও। মমতার প্রস্তাব, পূর্ব বর্ধমানে প্রচুর ফসল হয়। সেখান থেকে রফতানি করা গেলে কৃষকদের লাভ হবে।
বৈঠকে উপস্থিত বণিকসভা এবং শিল্প প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী ফের জানান, লিজ়ের জমির মালিকানা পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। বাজারদরে তার মূল্য নেওয়া হলেও ছাড়ের কথা বিবেচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে ওই জমির কিছু অংশ শিল্পের জন্য রেখে বাকিটা অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে।