চুক্তি ৬,৫০০ কোটির

বিদ্যুৎ কেন্দ্র হাতবদলে রাজি জিন্দল ভাইয়েরা

ধারের বোঝা বইতে গিয়ে নাজেহাল ছোট ভাই নবীন জিন্দল। এই অবস্থায় তাঁর সংস্থা জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ারকে (জেএসপিএল) প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকার অক্সিজেন জোগাতে এগিয়ে এলেন দাদা সজ্জন জিন্দল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০৩:২৯
Share:

সজ্জন (বাঁ দিকে) ও নবীন।

ধারের বোঝা বইতে গিয়ে নাজেহাল ছোট ভাই নবীন জিন্দল। এই অবস্থায় তাঁর সংস্থা জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ারকে (জেএসপিএল) প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকার অক্সিজেন জোগাতে এগিয়ে এলেন দাদা সজ্জন জিন্দল। বুধবার সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, জেএসপিএলের হাত থেকে ১,০০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিনে নিচ্ছে সজ্জনের জেএসডব্লিউ এনার্জি।

Advertisement

দুই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী হাতবদলের জন্য অন্তত ৪,০০০ কোটি টাকা জেএস ডব্লিউ দিচ্ছেই। পাশাপাশি, আরও ২,৫০০ কোটি দেওয়া হবে, যদি ছত্তীসগঢ়ের রায়গড়ে জেএসপিএলের হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দীর্ঘ মেয়াদে বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তি করতে পারে। ফলে সব মিলিয়ে সজ্জন ঢালবেন ৬,৫০০ কোটি টাকা।

জিন্দল গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ও পি জিন্দল এবং এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতম সেরা ধনী মহিলা সাবিত্রী দেবী জিন্দলের ছেলে সজ্জন ও নবীন। এক সময় বিদেশের মাটিতে সম্পত্তি কেনার দৌড়ে তুমুল প্রতিযোগিতাও চলেছে দুই ভাইয়ের মধ্যে। কিন্তু ‌শেষ পর্যন্ত কপাল পোড়ে জেএসপিএলের। কয়লা ব্লক বণ্টন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে পড়ে তাদের। ওই কাণ্ডে বিভিন্ন সংস্থাকে ব্লক দেওয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। যার জেরে নবীনের সংস্থার খননের লাইসেন্স বাতিল করার নির্দেশ শুনিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে বিদ্যুৎ ও ইস্পাত উৎপাদনের কাজে নিজস্ব খনি থেকে কয়লা পাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায় তাঁর সামনে। বড়সড় ধাক্কা খায় উৎপাদন। বাড়তে থাকে শোধ করতে না-পারা ঋণের চাপ।

Advertisement

গোদের ওপর বিষফোড়া হয়ে দেখা দেয় বিশ্ব জোড়া আর্থিক সঙ্কট। যার ঠেলায় সর্বত্র কমতে থাকে ইস্পাতের মতো বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা ও দাম। চূড়ান্ত বিপাকে পড়ে জেএসপিএল।

বর্তমানে নবীনের সংস্থা ডুবে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝায়। এ দিন জিন্দল স্টিলের তরফে দাবি, এই বিপুল ঋণ চুকিয়ে দিতে সাহায্য করবে সজ্জনের সংস্থার সঙ্গে এই চুক্তি। কারণ, ব্যাঙ্কগুলির কাছে তাদের দায় এই মুহূর্তে আকাশ ছুঁয়েছে। হাতবদলের প্রক্রিয়া আগামী ২০১৮ সালের মাঝামাঝি নাগাদ সম্পূর্ণ হওয়ার আশা করছে তারা।

তবে শুধু জেএসপিএল নয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হাতে এলে ব্যবসায় উপকৃত হবে জেএসডব্লিউ-ও। প্রথমত, এর ফলে তারা কয়লার ভাঁড়ার ছত্তীসগঢ়ের মাটিতে পা রাখতে পারবে। আর দ্বিতীয়ত, সংস্থাটির দাবি, আগামী ২০২০-র দশকের গোড়াতেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখনকার থেকে প্রায় তিন গুণ বাড়ানোর (প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট) যে-লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে তারা, সুবিধা হবে তা পূরণেও।

পাশাপাশি এই হাতবদলের চুক্তি হাসি ফুটিয়েছে নবীনের সংস্থার প্রধান ঋণদাতা ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের মুখেও। কারণ, জেএসপিএলের ঋণ শোধ হলে তাদের অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা কিছুটা অন্তত কমবে। যে কারণে এই চুক্তির ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছে তারাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement