অবশেষে উঠছে গয়না ধর্মঘট।
গত ২ মার্চ থেকে বেশির ভাগ রাজ্যে একটানা ৪০ দিন বন্ধ থাকার পরে আজ সোমবার থেকেই দেশ জুড়ে ঝাঁপ খুলছে গয়নার দোকানের। গয়না শিল্পের তরফে জানানো হয়েছে, ১% উৎপাদন শুল্ক তুলছে না কেন্দ্র। তবে তা আদায়ের প্রক্রিয়া সরল করা হবে বলে রবিবার কেন্দ্রের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে জানান, রাজধানী দিল্লিতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মধ্যস্থতায় এ দিন কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকেই রফাসূত্র মিলেছে, যার জেরে ধর্মঘট থেকে সরে আসছেন গয়না ব্যবসায়ীরা।
কেন্দ্র অবশ্য রুপো বাদে গয়না শিল্পে উৎপাদন শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তে অনড়। এ দিনই এর আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দিল্লি প্রেস ক্লাবে সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, সোনার মতো একটি ‘বিলাসবহুল সামগ্রী’কে করের আওতার বাইরে রাখা যায় না। বিশেষ করে যখন বহু অত্যাবশকীয় সামগ্রীর উপরই কর চাপানো হয়েছে। তিনি জানান, পণ্য-পরিষেবা কর চালু হওয়ার পরে তা সোনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না-হলে বাদবাকি পণ্যে আরও চড়া হারে ওই কর বসাতে হবে, যা যুক্তিযুক্ত নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ দিন বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত রফার পথেই হাঁটল গয়না শিল্প। একই সঙ্গে বহাল রইল ২ লক্ষ টাকার বেশি দামের গয়না কিনলে বাধ্যতামূলক ভাবে প্যান নম্বর দাখিল করার সরকারি সিদ্ধান্ত।
প্রসঙ্গত, ২ লক্ষ টাকার বেশি দামের গয়না কিনতে প্যান নম্বরের কথা আগেই বলেছিল কেন্দ্র। তারপর ২৯ ফেব্রুয়ারি বাজেটে গয়নায় শুল্ক বসানোর প্রস্তাবও আনেন জেটলি। ফলে এই জোড়া প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ গয়না শিল্প ২ মার্চ থেকেই ধর্মঘটের পথে হাঁটে। বিয়ের মরসুমে গয়না কিনতে নাজেহাল হন বহু মানুষ। পশ্চিমবঙ্গে ১৯ মার্চ ধর্মঘট তোলার সিদ্ধান্ত হলেও তা শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। রাজ্য ২৪ তারিখ থেকে ফের ধর্মঘটে যায়। ফলে কার্যত ৪০ দিন বাদেই ঝাঁপ খুলছে দোকানগুলি। শিল্পমহলের একাংশের মতে, বিয়ে এবং নববর্ষ-অক্ষয় তৃতীয়ার মতো উৎসবের মরসুমে বাজার হারানো ঠেকাতেই শেষ পর্যন্ত রফার পথে হাঁটতে বাধ্য হলেন বিক্রেতারা।