—প্রতীকী চিত্র।
হামেশাই অভিযোগ ওঠে, ক্যাশলেস বা নগদহীন স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পেতে আবেদন করার পরে বিমা সংস্থার অনুমোদন পেতে গ্রাহককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। বহু ক্ষেত্রে টাকা পাওয়া যাবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকায় সমস্যায় পড়েন বিমাকারী। বিমা সংস্থা হাসপাতালকে চূড়ান্ত বিলের টাকা মেটাতে অনেক সময় এত দেরি করে যে, সকালে ছাড়া পাওয়া রোগীর বাড়ি ফিরতে গড়িয়ে যায় সন্ধ্যে। এই পরিস্থিতিতে বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ-র নির্দেশ, নগদহীন ব্যবস্থায় চিকিৎসার জন্য গ্রাহকের দাবির টাকা মেটানোর ব্যাপারে বিমা সংস্থাগুলিকে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে এক ঘণ্টার মধ্যে। হাসপাতাল বিল পাঠানোর তিন ঘণ্টার মধ্যে বিমার টাকা মেটাতে হবে। রোগী মারা গেলে, অবিলম্বে হাসপাতালকে দেহ ছাড়তে হবে পরিবারের হাতে।
এগুলি ছাড়াও স্বাস্থ্য বিমা সংক্রান্ত আরও একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করেছে আইআরডিএ। বলেছে, গ্রাহকদের স্বার্থেই সব সিদ্ধান্ত। বছরভর প্রিমিয়াম গুনে প্রয়োজনের সময় তাঁদের যেমন দ্রুত বিমার সুবিধা দেওয়া জরুরি, তেমনই সেই প্রক্রিয়া হওয়া দরকার ঝক্কিহীন। লক্ষ্য, পরিষেবার উন্নতি। এ জন্য পুরনো ৫৫টি নির্দেশ বাতিল করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিমা সংস্থা স্টার হেলথের কর্তা প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, নিয়ন্ত্রকের নির্দেশ মেনে চলেন তাঁরা। এই দফারগুলিও কার্যকর করা হবে। তবে কিছু সমস্যার কথা মানেছেন তিনি। প্রবীরের বক্তব্য, ‘‘শল্য চিকিৎসার জন্য যাদের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, সেই সব জায়গায় বিমাকারীর মোট খরচের বেশির ভাগটা প্রথম দফাতেই মিটিয়ে দিই। বাকিটা চূড়ান্ত বিল পেয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অন্যান্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে মোট খরচ হিসাব করতে অনেক সময় সমস্যা হয়। তাই টাকা মেটাতেও দেরি হয়।’’
নির্দেশে বিমার মূল সুবিধাগুলি ছাড়াও সংস্থাগুলিকে ‘অ্যাডঅন’, ‘রাইডারের’ মতো অতিরিক্ত সুবিধার পরিধি বাড়াতে বলেছে নিয়ন্ত্রক। সব বয়স এবং সমস্ত অঞ্চলের গ্রাহকের জন্য প্রকল্প আনতে বলেছে। সব শ্রেণির গ্রাহককে সব রোগের জন্য সমস্ত হাসপাতালে বিমার সুবিধা দিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে প্রত্যেকে যেন সাধ্যের মধ্যে এই পরিষেবা পান। প্রকল্পের নথিতে গ্রাহককে সমস্ত শর্ত জানাতে হবে স্পষ্ট ও সহজ ভাষায়। আর বিবাদ মেটাতে বিমা ওম্বুডসম্যানের নির্দেশ ৩০ দিনের মধ্যে পালন করতে হবে। না হলে দিন প্রতি গ্রাহককে ৫০০০ টাকা করে জরিমানা দেবে বিমা সংস্থা।