একই সপ্তাহে দেখা গেল দেশের বৃহত্তম পাবিলক ইসু এবং প্রায় ১০০% লাভে অন্য একটি ইসুর শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধকরণ।
একই সপ্তাহে দেখা গেল দেশের বৃহত্তম পাবিলক ইসু (বাজারে সংস্থার প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ বা আইপিও) এবং প্রায় ১০০% লাভে অন্য একটি ইসুর শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধকরণ। ২০১০ সালে কোল ইন্ডিয়ার ইসুকে ছাপিয়ে গত সপ্তাহে বাজারে আসা পেটিএম-এর ১৮,৩০০ কোটি টাকার আইপিও এখনও পর্যন্ত নতুন ইসুর জগতে বৃহ্ত্তম। মোট আবেদন জমা পড়েছে প্রয়োজনের তুলনায় ১.৮৯ গুণ। যে দিন অনলাইনে টাকা মেটানোর এই সংস্থাটির ইসু বন্ধ হয়, সে দিনই শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে সদ্য আইপিও সেরে আসা প্রসাধন পণ্য বিক্রেতা নায়কা। ১১২৫ টাকায় ইসু করা এই শেয়ার নথিবদ্ধ হতেই দাম ওঠে ২০০১ টাকায় এবং দিনের তা শেষে হয় ২২০৭ টাকা। অর্থাৎ প্রথম দিনেই ৯৬% লাভ করেন সফল আবেদনকারীরা।
গত সপ্তাহে বাজারে এসেছে আরও দু’টি আইপিও, ল্যাটেন্ট ভিউ অ্যানালিটিক্স এবং স্যাফায়ার ফুডস। মনে করা হচ্ছে, একসঙ্গে এতগুলি মাঝারি থেকে বড় মাপের নতুন শেয়ার এসে বাজার থেকে অনেকটাই লগ্নি শুষে নিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা এবং তার জেরে সুদ বৃদ্ধির উদ্বেগ সত্ত্বেও আইপিও মারফত নগদের এই জোগান সাহায্য করেছে সূচককে চাঙ্গা রাখতে।
১৮ নভেম্বর পেটিএম শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হতে পারে। কী দামে হয়, তা জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন লগ্নিকারীরা। ভাল দামে নথিবদ্ধ হলে তা মদত জোগাবে পরের ইসুগুলিকে। চলতি অর্থবর্ষেই বাজারে আসার কথা এলআইসি-র পাবলিক ইসুর। এর আকার সম্ভবত ছাপিয়ে যাবে পেটিএমের আইপিও-কে।
নাগাড়ে ওঠার পরে ভারতে সূচক এখন ওঠানামার স্বাভাবিক রাস্তায় হাঁটছে। গত সোমবার সেনসেক্স উঠেছিল ৪৭৮ পয়েন্ট। পরের তিন দিনে নামে মোট ৬২৬। তবে শুক্রবার এই লোকসান পুষিয়ে ফের বাড়ে ৭৬৭। আবার পেরোয় ৬০ হাজার (৬০৬৮৭)। নিফ্টিও ওই দিন ২২৯ বেড়ে থামে ১৮,১০৩-এ।
বৃহস্পতিবার বাজার গোঁত্তা খেয়েছিল মূল্যবৃদ্ধিতে। লগ্নিকারীরা কেঁপে ওঠেন অক্টোবরে আমেরিকার খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৩১ বছরে সর্বোচ্চ (৬.২%) হওয়ার খবরে। পণ্যের দাম বাড়ার খবর আসে চিন থেকেও। এমন ভাবে দাম বাড়লে সুদ বাড়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে, এই আশঙ্কায় সূচক পড়তে শুরু করে বিশ্ব জুড়ে। ভারতে সেনসেক্স এবং নিফ্টি নামে যথাক্রমে ৪৩৩ এবং ১৪৪ পয়েন্ট। তবে পতন স্থায়ী হয়নি। অনেক শেয়ারের দাম নেমে আসায় এবং বাজারে টাকার জোগান অটুট থাকায় পরের দিনই তারা ঘুরে দাঁড়ায়।
তবে ভারতেও মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি বহাল। বহু মানুষ ভোজ্যতেল, খাদ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আগুন দাম নিয়ে অভিযোগ করছেন। মূল্যসূচকে বাস্তব পরিস্থিতি ততটা প্রতিফলিত না-হলেও, সেপ্টেম্বরের ৪.৩৫% থেকে বেড়ে অক্টোবরে দেশের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৪.৪৮%। উদ্বেগ বাড়িয়ে সেপ্টেম্বরে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হারও অনেকটা কমেছে। অগস্টের ১১.৯% থেকে নেমেছে ৩.১ শতাংশে।
(মতামত ব্যক্তিগত)