প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছেড়ে পুঁজি সংগ্রহের পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে এসেছে বহু সংস্থা। প্রতীকী ছবি।
সারা বিশ্বের আর্থিক বাজার টালমাটাল। তার প্রভাব পড়েছে ভারতেও। বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে বেড়েছে অনিশ্চয়তা। এই অবস্থায় প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছেড়ে পুঁজি সংগ্রহের পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে এসেছে বহু সংস্থা। মূলধনী বাজারের হিসাব, আজ, শুক্রবার শেষ হতে চলা অর্থবর্ষে এই প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করা পুঁজির অঙ্ক ২০২১-২২ অর্থবর্ষের তুলনায় অর্ধেকেরওনীচে নেমেছে।
মূলধনী বাজারের তথ্য সংরক্ষণকারী সংস্থা প্রাইম ডেটাবেস জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতের শেয়ার বাজারে ৫৩টি সংস্থা আইপিও ছেড়ে ১,১১,৫৪৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। আর চলতি (২০২২-২৩) অর্থবর্ষে তা নেমেছে ৫২,১১৬ কোটিতে। আইপিও ছেড়েছে ৩৭টি সংস্থা। এর মধ্যে শুধু এলআইসি এ যাবৎ বৃহত্তম আইপিও ছেড়ে ২০,৫৫৭ কোটি টাকা তুলেছে। অর্থাৎ, সমস্ত সংস্থার সংগ্রহ করা পুঁজির ৩৯%। প্রাইম ডেটাবেস জানিয়েছে, শেয়ার ছাড়ার অবশিষ্ট পথগুলি অনুসরণ করেও পুঁজি সংগ্রহে ভাটা চলেছে এ বছর। ২০২১-২২ সালের তুলনায় তা কমেছে ৫৬%।
বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর ব্যাখ্যা, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সারা বিশ্বের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। পাশাপাশি, মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের মতো ভারতের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও সুদের হার বাড়িয়ে নগদের জোগান কমিয়েছে। ফলে শেয়ার বাজারেও নগদ লেনদেনে লগ্নি কমেছে। এই পরিস্থিতিতে আইপিও ছেড়ে মূলধন সংগ্রহের পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে বহু সংস্থা।’’ একই সুরে আইসিআইসিআই প্রুডেন্সিয়াল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের লগ্নি পরিকল্পনা বিভাগের কর্তা চিন্তন হারিয়া বলেন, “ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদের চড়া হার শেয়ার বাজারকে চূড়ান্ত ভাবে অনিশ্চিত করে তুলেছে। একই সঙ্গে টান ধরেছে শিল্পের আয় এবং মুনাফায়। এই পরিস্থিতিতে প্রথম শেয়ার ছাড়ায় আগ্রহ কমেছে কর্পোরেট সংস্থাগুলির। অনেকেই স্থগিত করেছে আইপিও-র পরিকল্পনা।’’