Indian Oil Corporation Limited

বন্ধ হতে পারে কল্যাণীতে আইওসি-র বটলিং কারখানা

কল্যাণী থেকে মূলত কলকাতার একটা বড় অংশ, উত্তর ২৪ পরগণা, হুগলি, নদিয়া, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের একটা অংশে রান্নার গ্যাস যায়। ফলে কারখানাটি বন্ধ হলে এই সব অঞ্চলের ইন্ডেন গ্রাহকেরা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

কল্যাণীতে ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসি) রান্নার গ্যাসের বটলিং কারখানায় কর্মীদের একাংশের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সংঘাতে ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় ইন্ডেনের সিলিন্ডার সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। সম্প্রতি সংস্থার তরফে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালানো হলেও জট কাটেনি। উল্টে পরিস্থিতি এখনও এতটাই ঘোরালো যে, আগামী দিনে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিল আইওসি। কল্যাণী থেকে মূলত কলকাতার একটা বড় অংশ, উত্তর ২৪ পরগণা, হুগলি, নদিয়া, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের একটা অংশে রান্নার গ্যাস যায়। ফলে কারখানাটি বন্ধ হলে এই সব অঞ্চলের ইন্ডেন গ্রাহকেরা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা। সূত্রের দাবি, কল্যাণীর বটলিং কারখানা কোনও কারণে বন্ধ হয়ে গেলে বজবজ এবং খড়্গপুর-সহ সব কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা কিছুটা করে বাড়িয়ে চাহিদা পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বটে। তবে তার পরেও যে সমস্যা থাকবে, তা মেনে নিচ্ছে সব পক্ষই।

Advertisement

সম্প্রতি দরপত্র প্রক্রিয়ায় ঠিকা ট্রান্সপোর্ট মজদুর সঙ্ঘ নিয়ন্ত্রিত সিলিন্ডার জোগানের গাড়ি কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে আন্দোলন শুরু করেছে বিএমএস সমর্থিত ওই সংগঠন। আইওসি কর্তৃপক্ষের দাবি, ম্যানেজার-সহ একাধিক আধিকারিককে টানা তিন সপ্তাহ ধরে কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সোমবার সংস্থা সূত্রের ইঙ্গিত, পরিস্থিতি না বদলালে শীঘ্রই হয়তো বন্ধের পথে যেতে পারে কল্যাণীর ইন্ডেন বটলিং প্লান্ট। সূত্রটির দাবি এমনিতে কারখানার ঝাঁপ ফেলার কোনও পরিকল্পনা বা ইচ্ছা নেই আইওসি-র। কিন্তু যে ভাবে আন্দোলনের নামে আধিকারিকদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না, তা আর বেশি দিন চললে তালা ঝোলানো ছাড়া বিকল্প রাস্তা খোলা থাকবে না সামনে। কারণ, ম্যানেজার দীর্ঘ দিন ধরে ঢুকতে না পারায় কারখানার সুরক্ষা ও নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলির সঙ্গে আপস করা হচ্ছে। এই সময় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নেবে, প্রশ্ন তুলেছেন আইওসি কর্তৃপক্ষ।

সূত্রের খবর, এ মাসের ৮ তারিখ থেকে প্লান্ট ম্যানেজার-সহ একাধিক আধিকারিকে কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে কারখানার সুরক্ষা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। এই সমস্যা কাটাতেই গত সপ্তাহে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, এডিজি দক্ষিণবঙ্গ, পুলিশ সুপার ও জেলা শাসককে সবিস্তারে বিষয়টি জানায় আইওসি। তার পরে সংস্থার দুই উচ্চপদস্থ আধিকারিককে কারখানায় পাঠানো হয় সব খতিয়ে দেখার জন্য। কিন্তু তার পরেও জট কাটেনি। সূত্রের দাবি, কল্যাণী বটলিং কারখানা নিয়ে সংস্থার কর্তাদের একাংশ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে। এই সমস্যা বেশি দিন চলতে দিলে কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement

আন্দোলনকারী ইউনিয়নের অবশ্য দাবি, কাজ স্বাভাবিক হচ্ছে। গাড়ি স্বাভাবিক ভাবেই সিলিন্ডার নিয়ে যাতায়াত করেছে। তবে সূত্রের খবর, ডিলারদের কাছে এখনও চাহিদা মতো গ্যাস সিলিন্ডার যাচ্ছে না। বহু গ্রাহককে কমপক্ষে ৬-৭ দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে গ্যাস বুক করার পরে। একাংশ এতে বিপাকেও পড়ছেন। ইউনিয়নের দাবি-দাওয়া নিয়ে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীকে চিঠি লিখেছেন। সূত্র বলছে, তার পরেও সমস্যা না মেটাতেই কারখানা বন্ধের ভাবনা। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এমনিতেই রাজ্যে লগ্নির খরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement