চলতি মাসের শেষ দু’সপ্তাহ বাজারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২৩ মে প্রকাশিত হবে লোকসভা ভোটের ফল। তার পরে কয়েক দিন উত্তেজনা থাকবে নতুন সরকার গঠন নিয়ে। কারা ক্ষমতায় আসবে, কোন মন্ত্রক কার আওতায় যাবে— এই সবের দিকেই উৎসাহ নিয়ে তাকিয়ে থাকবে বাজার। একই সঙ্গে চলবে পুরো ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ এবং তার শেষ তিন মাসের ফল প্রকাশের পালা। তা শেষ হবে ৩০ মে। ফলে সব মিলিয়ে ওই ক’দিনে ভাল রকম দোলাচল থাকবে শেয়ার বাজারে। যে কারণে লগ্নিকারীদেরও সতর্ক হয়ে পা ফেলতে হবে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টানা দু’বার রেপো রেট কমালেও, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি সেই অনুপাতে ঋণ ও আমানতে সুদের হার কমায়নি। এর ফলে ঝিমিয়ে আছে গাড়ি ও বাড়ি বিক্রি, যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে অন্যান্য শিল্পে। কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে সুদের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর। এখন সেনসেক্স ঘোরাফেরা করছে ৩৯,০০০-এর আশেপাশে। যা চড়া মনে হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এই অবস্থায় সংস্থা বাছাই করে টাকা ঢালতে না পারলে সমস্যা হতে পারে।
তার উপরে শেয়ারের তুলনায় ঝুঁকি কম থাকায় এর আগে অনেকেই লগ্নি করেছিলেন ঋণপত্র নির্ভর (ডেট) ফান্ডে। এই ফান্ডে তিন বছর বা তার বেশি সময় লগ্নি ধরে রেখে ইউনিট বেচলে মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। ফলে কম কর দিতে হয়। কিন্তু ফান্ড সংস্থাগুলির লগ্নি করা কিছু সংস্থায় সম্প্রতি আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যার জেরে কিছু ক্ষেত্রে লগ্নির টাকা ফেরত আসছে না। ফলে ভাল রকম কমেছে কয়েকটি ফান্ডের নেট অ্যাসেট ভ্যালু (ন্যাভ)। আবার কিছু সংস্থার রেটিংও কমানো হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে ডেট ফান্ডগুলিকেও এখন আর লগ্নির জন্য তত নিরাপদ জায়গা বলে ভাবা যাবে না।
এ দিকে আবার ডেট ফান্ডে সমস্যা দেখা দেওয়ায় আকর্ষণ বাড়ছে ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফসি) মেয়াদি জমা ও বন্ডের। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে যে, সব জায়গা সমান সুরক্ষিত নয়। বিশেষ করে গত বছরের একটা সময় জুড়ে এনবিএফসিগুলির টাকা ফেরত নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তাই কোনও জায়গায় লগ্নির আগে সংস্থাটিকে ভাল করে যাচাই করতে হবে।
এই অনিশ্চয়তার মধ্যে আশার আলো সংস্থার ফল। গত অর্থবর্ষের শেষ
ত্রৈমাসিকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের নিট মুনাফা ১৩.৮৪% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৫৩৮ কোটি টাকা। কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে তা বেড়ে হয়েছে ১,৪০৮ কোটি। এলঅ্যান্ডটি ফিনান্সের সামগ্রিক মুনাফা ৯৪% বেড়ে পৌঁছেছে ৫৪৮ কোটিতে। বন্ধন ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ৬৮% বেড়ে হয়েছে ৬৫১ কোটি। রিলায়্যান্স নিপ্পনের লাভ বেড়েছে ৩৪%। বায়োকনের ৬৪%। গত অর্থবর্ষে বিড়লা কর্পোরেশনের নিট লাভ পৌঁছেছে ২৫৬ কোটিতে। অর্থাৎ ফলের দিক থেকে খুব খারাপ কাটেনি গত সপ্তাহটা।
(মতামত ব্যক্তিগত)