প্রতীকী ছবি
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টায় আর এক দফা দাওয়াই দেওয়ার আগে করোনার টিকা কবে বাজারে আসবে, তা বুঝে নিতে চাইছে মোদী সরকার। অর্থ মন্ত্রক মনে করছে, করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন কবে মিলবে, তা স্পষ্ট জানা গেলেই মানুষের মনে অনিশ্চয়তা অনেকখানি কমে যাবে। রোজকার প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে অনেকেই তখন খরচ করতে শুরু করবে। ঠিক সেই সময় বাজারে চাহিদা বাড়ানোর জন্য কোনও দাওয়াই দেওয়া গেলে, তার সব থেকে বেশি ফল মিলবে।
দ্বিতীয় দফার আর্থিক দাওয়াইয়ে যে বাজারে চাহিদা বাড়ানোর দিকে লক্ষ্য রেখেই সরকার টাকা ঢালবে, তা স্পষ্ট করে আজ কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম বলেন, “যদি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে টিকা এসে যায়, তা হলে সেটাই হবে আর্থিক দাওয়াইয়ের ঠিক সময়। কারণ, এর ফলে দৈনন্দিন প্রয়োজনের বাইরে খরচ বাড়বে।”
সুব্রহ্মণ্যমের যুক্তি, লকডাউন পর্বে অনিশ্চয়তার জন্য মানুষ খরচ না-করে সঞ্চয় করেছে। এটা বোঝাতে তিনি টানেন প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার প্রসঙ্গ। বলেন, এই জন্যই জনধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে। তবে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে সমস্যার জন্য ভারত পিছিয়ে পড়ছে বলেও জানান তিনি। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার বক্তব্য, ভারতে আরও বড় মাপের ব্যাঙ্ক থাকা খুব জরুরি।
কেন্দ্রের আনা ২০ লক্ষ কোটি টাকার ‘আত্মনির্ভর প্যাকেজ’ সম্পর্কে শিল্পমহল ও অর্থনীতিবিদদের সব থেকে বড় অভিযোগ ছিল, এর সিংহভাগই ব্যাঙ্কের ঋণ। বাজারে চাহিদা বাড়ানোর দাওয়াই নেই। বরং মানুষের হাতে টাকা তুলে দিলে চাহিদা বাড়ত। অর্থ মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, লকডাউনের মধ্যে বাজারে কেনাকাটা বাড়ানোর চেষ্টা করে লাভ হত না। আজ বণিকসভা ফিকি-র অনুষ্ঠানে সুব্রহ্মণ্যমকে শিল্পপতিরা প্রশ্ন করেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সুদ কমানো, ঋণ দেওয়ার বাইরে কেন্দ্র অন্য কোনও পথের কথা ভাবছে কি না! জবাবে তিনি বলেন, “প্রশ্নটা দাওয়াই আসবে কি আসবে না, সেটা নয়। প্রশ্ন হল, কবে আসবে। এখানে দিনক্ষণটা খুবই জরুরি। যাতে প্রতি পাই-পয়সার সব থেকে বেশি প্রভাব পড়ে।”
এখন প্রশ্ন, সরকার টাকা ঢালবে কোথা থেকে? অর্থ মন্ত্রকের দাবি, কোষাগার ভরার একমাত্র উপায় বিলগ্নিকরণ। অর্থ মন্ত্রকের বিলগ্নিকরণ সচিব তুহিন পাণ্ডে মেনেছেন, করোনা কেন্দ্রের বিলগ্নিকরণের পথেও বাধা হয়েছে। পরিবহণ ক্ষেত্র স্তব্ধ হওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নি হোঁচট খেয়েছে। এ দিকে বিলগ্নিকরণ থেকে কেন্দ্রের এ বছর ২.১ লক্ষ কোটি ঘরে তোলার লক্ষ্য। তুহিনের যুক্তি, “এয়ার ইন্ডিয়া বিলগ্নিকরণের প্রক্রিয়া শেষ করা কেন্দ্রের অগ্রাধিকার।” বিমান সংস্থাটি কিনতে দরপত্র জমার সময়সীমা তারা ৩১ অগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: নাগাড়ে চাহিদা বাড়ায় নজিরবিহীন সোনার দর