রাজ্য সরকারের ‘থিম সিটি’ প্রকল্পে এক লপ্তে বড় জমিতে লগ্নির ঝুঁকি নিতে নারাজ নির্মাণ শিল্পমহল।
তলানিতে ঠেকা আবাসনের বাজারে এক সঙ্গে বড় অঙ্কের লগ্নি করে টাকা আটকে রাখা সম্ভব নয় বলে দাবি নির্মাণ শিল্পের। বরং প্রকল্পের মোট জমি ছোট ছোট প্লটে ভাগ করে দিলে, লগ্নি সহজ হবে। সম্প্রতি নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই রাজ্যকে এই পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে তাদের আর্জি, প্রকল্পের প্রাথমিক পরিকাঠামো গড়ে দিক রাজ্য। যে-ভাবে রাজারহাট উপনগরী ও শিল্প তালুকগুলিতে রাস্তাঘাট, জল, নিকাশি, বিদ্যুতের মতো নাগরিক পরিকাঠামো তৈরি করেছে সরকার।
ডাবগ্রাম, বোলপুর, আসানসোল, কল্যাণী, ডুমুরজলা ও বারুইপুরে ‘থিম’ শহর তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। নির্মাণ শিল্পমহলের মতে, কলকাতা থেকে দূরত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে ব্যবসার জন্য জরুরি তিনটি উপকরণ—পরিকাঠামো, বাজার ও ক্রয়ক্ষমতা। ফলে এ সব প্রকল্প কতটা লাভজনক হবে, সে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে।
তবে থিম সিটি প্রকল্পে বিনিয়োগ টানতে চেষ্টার কসুর করেনি রাজ্য। ‘ফ্লোর এরিয়া রেশিও’ বা জমির অনুপাতে নির্মিত বর্গ ফুটে ছাড় দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কম জমিতে বেশি বর্গ ফুট তৈরি করে লাভ বাড়াতে পারবে নির্মাণ সংস্থা। জমির সমস্যা নেই। সরাসরি রাজ্যের থেকেই জমি লিজে নেবে বিনিয়োগকারী। জমিও কম নয়। আসানসোলে ৫৯.৩, কল্যাণীতে ৫০.৭, হাওড়া ডুমুরজলায় ৫০ একর। ডাবগ্রাম ও বারুইপুরে আছে যথাক্রমে ৮৪.৪ ও ৮৬.২ একর জমি। সব চেয়ে বেশি জমি বোলপুরে, ১৩৫.৩ একর।
২০১৫ সালে এই ছ’টি ‘থিম সিটি’ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। দায়িত্বে রয়েছে হিডকো। নির্মাণ শিল্পমহলের তরফে সাড়ার অভাবেই দফায় দফায় দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পিছিয়েছে। ক্রেডাইয়ের মতে, লগ্নি টানতে প্রকল্পের পরিকল্পনা বদল তাই জরুরি হয়ে পড়েছে।