এই প্রথম প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামছেন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্মীরা।
ফোরাম ফর আইটি অ্যান্ড আইটিইএস এমপ্লয়িজ (ফাইট) সূত্রের খবর, চাকরি ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এ মাসের শেষেই দেশের প্রধান প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রে প্রতিবাদ মিছিল করবেন কর্মীরা। চেষ্টা হচ্ছে এমন ভাবে দিন ঠিক করার, যাতে একই দিনে মিছিলে পা মেলাতে পারে কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই।
ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় ঘুম ছোটার পরে রেজিস্টার্ড ইউনিয়ন তৈরির পথে এগোচ্ছে ফাইট-এর মতো সংগঠন। এখন মূলত যাদের উপস্থিতি কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুতে।
এই শিল্পেরই অনেকে বলছেন, ছাঁটাইয়ের ধাক্কা স্বভাব বদলে দিচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের। সাধারণত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প বললে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সার সার কম্পিউটারে চুপচাপ টানা কাজ করার ছবি। বন্ধ উপেক্ষা করে অফিসে আসা। ছুটির পরেও থেকে হাতের কাজ শেষ করার মানসিকতা।
চাকরি লোপাট
• ভারতে কাজের সুযোগ কমছে ৫ বছর ধরে
• ২০১৫-’১৬ সালে নিয়োগের কথা ছিল ২.৭৫ লক্ষ। হয়েছে ২ লক্ষ
• ২০২১ সালের মধ্যে কাজ কমবে ৬.৪ লক্ষ। লোপাট হতে পারে ৬৯% চাকরি
• ২০১৬ সালে ১২% লোক কম নিয়েছে টিসিএস, উইপ্রো, ইনফোসিস ও এইচসিএল
• ছাঁটাইয়ের খবর মিলেছে কগনিজ্যান্ট, আইবিএম, ইনফোসিস, টেক মহীন্দ্রা, ক্যাপজেমিনি ইত্যাদিতে
• কেন্দ্র ও সংস্থাগুলির অবশ্য দাবি, ছাঁটাই হচ্ছে না। কর্মী বাদ দেওয়া হয়েছে মূল্যায়নের ভিত্তিতেই
পা মিলিয়ে
• এই প্রথম রাস্তায় নামছেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা
• চলতি মাসেই মিছিল কলকাতা, বেঙ্গালুরু-সহ সমস্ত প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রে
• চেষ্টা চলছে ইউনিয়ন তৈরিরও
• ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে দরবার সরকারের কাছে
* তথ্যসূত্র: হর্সেস ফর সোর্সেস রিসার্চ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক
তা ছাড়া, বহু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার যেখানে অফিস, সেই বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে (সেজ) শ্রমনীতি অনেকটা আলাদা। কর্মীদের মনে এত দিন ঐক্যবদ্ধ হতে গিয়ে সংস্থার রোষে পড়ার ভয় কাজ করেছে। কিন্তু এখন ছাঁটাইয়ের কোপে পড়ার আতঙ্ক দ্রুত পাল্টে দিচ্ছে সেই ছবি। রুজি-রুটি হারানোর আশঙ্কায় একজোট হয়ে প্রতিবাদে নামতে চান অনেক কর্মী।
এ ছাড়া পিটিআইয়ের খবর, ছাঁটাই রুখতে এখন সরকারের ঘরেও দরবার করছে ফাইট। চেন্নাই ও হায়দরাবাদের পরে কগনিজ্যান্টের ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এ বার বেঙ্গালুরুতেও শ্রম কমিশনে আর্জি জমার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। একই পরিকল্পনা পুণে ও কলকাতার ক্ষেত্রে। এক দিকে, ট্রাম্প জমানায় এইচ-১বি ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি। অন্য দিকে, অটোমেশন, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তির দাপট। দু’য়ের জাঁতাকলে কাজ খোয়ানোর চোখ রাঙানির সামনে পড়েই তথ্যপ্রযু্ক্তি কর্মীদের স্বভাব বদলাচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্প।