দেশে চাহিদা ফুলে-ফেঁপে ওঠা ও সেই সঙ্গে বিদেশে রফতানিতে সাফল্যের হাত ধরে মার্চে কল-কারখানায় উৎপাদন পাঁচ মাসে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। পাশাপাশি, ইউরোপ-এশিয়া জুড়েও মার্চে শিল্প জোরকদমে এগিয়েছে বলে সোমবার দাবি করেছে আইএইচএস মার্কিট-এর সূচক। আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গোঁড়া আর্থিক নীতির জেরে রফতানি ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও ইউরোপে শিল্পের চাকা গতি ধরে রেখেছে বলে মত সমীক্ষায়। এশিয়ার শিল্প বৃদ্ধিতে অবশ্য নেতৃত্ব দিয়েছে চিন। তাদের ক্ষেত্রে এই সূচকের গতি গত প্রায় পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ।
লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা মার্কিট-এর ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেজিং ম্যানেজার্স ইন্ডেক্স (পিএমআই) বা শিল্পের বিপণন সূচক ভারতে মার্চে ছুঁয়েছে ৫২.৫, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৫০.৭। এই নিয়ে পরপর তিন মাস ৫০-এর উপরেই রয়েছে এই সূচক। প্রসঙ্গত, এই সূচক ৫০-এর উপরে থাকা মানেই কারখানার উৎপাদন বাড়ার ইঙ্গিত। তার নীচে নেমে গেলে সেটা শিল্পোৎপাদন সরাসরি কমার লক্ষণ। ৫০-এ থাকার অর্থ স্থিতাবস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এই সূচক হিসাবের জন্য বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার উপর প্রতি মাসে সমীক্ষা চালায় মার্কিট। তাদের কাছ থেকে বরাতের পরিমাণ, ক্রেতার চাহিদা, কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি ইত্যাদি তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করা হয় এই সূচক। পিএমআইয়ের আওতায় নতুন বরাত ও উৎপাদন সংক্রান্ত সূচক ২০১৬-র অক্টোবরের পর থেকে মার্চেই বেড়েছে সবচেয়ে বেশি হারে। তা দাঁড়িয়েছে ৫৩.৬। আগের মাসে ছিল ৫১.৩-এ। মার্কিটের মতে, এটা নভেম্বরে নোট বাতিলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠারই লক্ষণ।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকার ইঙ্গিতও দিয়েছে সমীক্ষা। সংস্থার অর্থনীতিবিদ পলিআন্না দ্য লিমা বলেছেন, ‘‘চাহিদা ফেরার পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির চাপ ছিল অনেকটাই কম। কাঁচামালের দাম ঢিমেতালে এগোনোর জেরে ৯৬% উৎপাদনকারী তাদের বিক্রয়মূল্য মার্চ মাসে একই জায়গায় ধরে রেখেছেন।’’
ইউরোপীয় অঞ্চলে কল- কারখানার জন্য মার্কিট-এর পি এম আই ছুঁয়েছে ৫৬.২, যা গত প্রায় ছ’বছরে সর্বোচ্চ। তবে আলাদা করে ব্রিটেনের সূচক গত মাসে কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। এর কারণ, রফতানিতে তেমন সাফল্য না-আসা ও মূল্যবৃদ্ধির চাপে চাহিদা কমে যাওয়া। অন্য দিকে, চিনে শিল্পের জন্য পিএমআই ৫১.৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫১.৮। মূলত নির্মাণ শিল্পের হাত ধরেই এই সূচক এতটা এগিয়েছে।