বিভিন্ন স্টেশনে নামের বোর্ড এমন ভাবে লাগানোর কথা বলা হয়েছে, যাতে ট্রেন থামলে প্রতিটি কামরা থেকে অন্তত একটি বোর্ড দেখতে পান যাত্রীরা। প্রতীকী ছবি।
ছবি, রং এবং বিশেষ চিহ্নের নিরিখে দেশের সব স্টেশনে একই ধরনের সঙ্কেত (সাইনেজ) ব্যবহার করতে উদ্যোগী হচ্ছে ভারতীয় রেল। এ ব্যাপারে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে ওই পরিকল্পনার বিস্তারিত রূপরেখার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। রূপরেখা সংক্রান্ত পুস্তিকাটিতে বিভিন্ন স্টেশনে সেখানকার নামের বোর্ড এমন ভাবে লাগানোর কথা বলা হয়েছে, যাতে ট্রেন থামলে প্রতিটি কামরা থেকে অন্তত একটি বোর্ড দেখতে পান যাত্রীরা।
রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, স্টেশনে যাত্রীদের ঢোকা-বেরোনোর পথের সঙ্কেত, ট্রেন বদলের জায়গা, প্রতীক্ষালয় থেকে শুরু করে আপৎকালীন পথের নির্দেশিকা সমেত সব কিছুই নতুন করে লাগানো হবে। সব ধরনের যাত্রীদের রেলের বিভিন্ন পরিষেবা সম্পর্কে জানাতে এমন সহজবোধ্য একগুচ্ছ সঙ্কেত থাকা জরুরি হয়ে পড়ছিল। এত দিন বিভিন্ন স্টেশনে সেগুলি বিভিন্ন রকমের রং ব্যবহার করে লেখা হচ্ছিল বলে দাবি করেন বৈষ্ণব।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্ল্যাটফর্মে স্টেশনের নাম লেখা বোর্ড এক মিটার ব্যাসের হবে। বৃত্তাকার ওই বোর্ডের উপরের অর্ধেক গেরুয়া রং থাকবে। মাঝখানে আয়তাকার মোটা নীল রঙের উপরে সাদা হরফে পর পর তিনটি ভাষায় স্টেশনের নাম লেখা থাকতে হবে। সব থেকে উপরে আঞ্চলিক ভাষায় লেখা থাকবে স্টেশনের নাম। মাঝে হিন্দিতে এবং তলায় ইংরেজিতে। বোর্ডটির নীচে থাকবে সবুজ রং। যাত্রীদের দেখতে পাওয়ার সুবিধার জন্য প্ল্যাটফর্ম থেকে দু’মিটার উচ্চতায় সেটি বসাতে হবে। একই নির্দেশিকা মেনে ভিডিয়ো স্ক্রিন এবং এলইডির মাধ্যমে বিভিন্ন রং ব্যবহার করে বিভিন্ন ট্রেনের নাম এবং কোচ সংখ্যার উল্লেখ থাকবে।
ভারতীয় রেল সূত্রের খবর, প্রতিটি সঙ্কেতের ক্ষেত্রে রং নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র প্রকাশিত পরিকল্পনার রূপরেখায়। যেমন, স্টেশন থেকে বার হয়ে আসার পথের নির্দেশ সম্বলিত বোর্ডে গাঢ় নীল আবহে হলুদ রং দিয়ে লেখা থাকতে হবে রাস্তার নির্দেশিকা। আপৎকালীন পথের নির্দেশিকা সংক্রান্ত লেখা হতে হবে গাঢ় সবুজের উপর সাদা দিয়ে। এ ছাড়াও প্রতীক্ষালয়, ভিআইপি লাউঞ্জ, খাবার জায়গা-সহ যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন কক্ষের নাম এবং তার হদিশ কমলা রঙের উপরে সাদা দিয়ে লেখা হবে।
সারা দেশে ১২৭৫টি স্টেশনকে ‘অমৃত ভারত’ পরিকল্পনার আওতায় মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে দীর্ঘ মেয়াদে উন্নত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল। এর মধ্যে ৮৮টি স্টেশনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বাকি ১১৮৭টির ক্ষেত্রে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। অমৃত ভারত পরিকল্পনার আওতায় রাজ্যে পূর্ব রেলের ৬০টি স্টেশন রয়েছে। শিয়ালদহ, দমদম, ব্যারাকপুর, কল্যাণী, সোনারপুরের মতো একাধিক স্টেশন রয়েছে ওই তালিকায়। হাওড়া, কলকাতা, ব্যান্ডেল, আসানসোলের মতো কয়েকটি স্টেশনকে অবশ্য পৃথক পরিকল্পনার আওতায় নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে।