রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। ফাইল চিত্র।
পাহাড়প্রমাণ অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা তো রয়েইছে। এর সঙ্গে শুধু আর্থিক প্রতারণায় গত ১১ বছরে দেশের ব্যাঙ্কগুলিকে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি গুণাগার দিতে হয়েছে।
সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) রিপোর্টে জানিয়েছে, ওই সময়ে ৫০ হাজারেরও বেশি প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে (পিএনবি) প্রায় ১৪,০০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক প্রতারণায় অন্যতম অভিযুক্ত হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীর মতো শিল্পকর্তাদের দেশ ছেড়ে পালানোর ঘটনা এখনও যখন রাজনৈতিক চর্চার বিষয়, তখন এই রিপোর্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
নীবর ও মেহুল, দু’জনেই দেশ ছাড়ার ঘটনায় প্রথম মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছিল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। বিজেপির পাল্টা দাবি ছিল, ইউপিএ আমলেই তাঁদের ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল। সম্প্রতি গত অর্থবর্ষের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পরে ক্রমবর্ধমান ব্যাঙ্কিং প্রতারণার নিয়ে কেন্দ্রের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস।
এই প্রেক্ষাপটে আরবিআইয়ের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ পর্যন্ত দেশে বেড়েছে ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা। পাল্লা দিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তার অঙ্কও। ২০০৮-০৯ সালে যা ১,৮৬০ কোটি টাকা ছিল। ২০১৮-১৯ সালে তা-ই দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার কোটির বেশি।
রিপোর্ট বলছে, ওই সময়ের মধ্যে টাকার অঙ্কে (৫,০৩৩ কোটি টাকা) কম হলেও সবচেয়ে বেশি প্রতারণা ঘটেছে বেসরকারি আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কে, ৬৮১১টি। অন্য দিকে, পিএনবি-তে ২,০৪৭টি ঘটনায় প্রতারণা হয়েছে মোট ২৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। টাকার অঙ্কে যা সবক’টি ব্যাঙ্কের মধ্যে সর্বাধিক।
এর পরেই রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। সেখানে ২৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা হয়েছে ৬,৭৯৩টি ঘটনায়। দু’টি ক্ষেত্রেই যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া, ১০,০০০ কোটি টাকার বেশি প্রতারণা হওয়া অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলি হল ব্যাঙ্ক অব বরোদা (১২,৯৬২ কোটি টাকা), ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (১২,৩৫৮ কোটি টাকা), ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক (১২,৬৪৪ কোটি টাকা), ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক (১১,৮৩০ কোটি টাকা)।
শুধু ভারতীয় ব্যাঙ্কই নয়, এখানে ব্যবসা করা বিদেশি ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রেও এই সময়ে প্রতারণার ঘটনার তথ্য প্রকাশ করেছে আরবিআই। যাদের মধ্যে রয়েছে সিটি ব্যাঙ্ক, এইচএসবিসি, আমেরিকান এক্সপ্রেস প্রভৃতি। তেমনই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পেটিএম পেমেন্টস ব্যাঙ্কেও দু’টি ঘটনায় ২ লক্ষ টাকার প্রতারণা ঘটেছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।