ইমরান খান
কঠিন উইকেটে ব্যাট হাতে ঝাঁঝালো পেস আক্রমণ অনেক সামলেছেন। বল হাতে ঘাম ছুটিয়ে ছেড়েছেন বাঘা ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু এ বার পাকিস্তানের মসনদে বসার আগেই কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ইমরান খান। শুরুতেই বাউন্সার ধেয়ে এল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের তরফ থেকে।
সন্ত্রাসবাদ তো আছেই। তার পাশাপাশি চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে বিপুল ঘাটতি, বিদেশি মুদ্রার সঙ্কট, কাজের অভাব— সব মিলিয়ে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির সমস্যায় পাকিস্তান এখন ন্যুব্জ। এমনই হাজারো সমস্যা ঘাড়ে নিয়ে ১১ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নিতে পারেন ইমরান। সূত্রের খবর, এই সঙ্কট থেকে দেশকে বার করতে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা ১,২০০ কোটি ডলারের ত্রাণ প্রকল্প চেয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এই অবস্থায় আইএমএফকে আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে রাখল আমেরিকা। পরিষ্কার জানাল, ত্রাণ প্রকল্পের টাকা যেন চিনের ঋণ শোধে ব্যয় না হয়।
আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, পাকিস্তানের ভাবী সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে তাঁরা আগ্রহী। কিন্তু তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘ত্রাণ প্রকল্পের টাকা চিন ও তাদের বন্ড ক্রেতাদের পকেটে যাওয়ার কোনও যুক্তি নেই। ত্রাণ প্রকল্পে আমেরিকার করের টাকাও থাকে। ফলে আইএমএফ কী করছে সে দিকে আমাদের নজর থাকবে।’’ আইএমএফ আপাতত ওয়াশিংটনের বাউন্সার পাশ কাটিয়েছে। জানিয়েছে, পাকিস্তানের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আর্জি জানানো হয়নি। বেজিংও জানিয়েছে, আইএমএফের নিজস্ব নিয়ম আছে। তাই এ নিয়ে তাদের ভেবে কাজ নেই।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকার এই হুঁশিয়ারি ইমরানের হবু প্রশাসনের কাছে বাড়তি চাপ বলে মনে করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকেরা। কারণ, আর্থিক দৈন্যের মোকাবিলার নামে বার বার আইএমএফ ও বেজিংয়ের কাছেই হাত পাততে হয় পাকিস্তানকে। আইএমএফের তথ্য বলছে, ১৯৮০ সাল থেকে অন্তত ১৪ বার তাদের কাছ থেকে ধার নিয়েছে ইসলামাবাদ। শেষ বার ২০১৩ সাল থেকে তিন দফায় ৬,৭০০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে তারা।
ঋণ দেওয়ার হিসেবে পিছিয়ে নেই চিনও। পাকিস্তানের পরিকাঠামো প্রকল্পের জন্য চিন ও তাদের ব্যাঙ্কগুলি থেকে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। চেয়েছে আরও ১০০ কোটি ডলার। তাই তাদের এখন ‘ট্রাম্প না চিন রাখি’ দশা।