আইএল অ্যান্ড এফএস।
ক্রমাগত বিঁধছেন বিরোধীরা। আইএল অ্যান্ড এফএস ঘিরে নতুন দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। কটাক্ষ করছে ফের ‘বন্ধুদের বাঁচানো’ হচ্ছে বলে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পরিকাঠামোয় ঋণদাতা সংস্থাটির সঙ্কট মোচনে তড়িঘড়ি মাঠে নামল কেন্দ্র। জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালের (এনসিএলটি) সায় নিয়ে ভাঙল তাদের পরিচালন পর্ষদ। কোম্পানি আইনের ২৪১(২) এবং ২৪২ ধারা প্রয়োগ করে। ২০০৯ সালে ঠিক যে ধারায় সত্যম কম্পিউটারের পর্ষদ অধিগ্রহণ করেছিল তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। যে সংস্থায় ৮,০০০ কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতি তোলপাড় ফেলেছিল দেশ জুড়ে।
সত্যম পরিচালনায় হস্তক্ষেপের যুক্তি হিসেবে সরকার বলেছিল, পর্ষদ যে ভাবে কাজ চালাচ্ছে, তা আমজনতার স্বার্থের পরিপন্থী। এ দিন আইএল অ্যান্ড এফএসের ক্ষেত্রেও একই যুক্তি দিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের কৌঁসুলি। কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী, সংস্থার নতুন পর্ষদে থাকছেন শুধু সরকার মনোনীত ছ’জন প্রতিনিধি। এনসিএলটি জানিয়েছে, পর্ষদ অবিলম্বে দায়িত্ব নেবে। সময় বেঁধে পরিকল্পনা ছকবে ঘুরে দাঁড়াতে।
দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট। তার আগে আইএল অ্যান্ড এফএস নিয়ে কেন্দ্রকে শ্বাস ফেলতে দিচ্ছে না বিরোধীরা। শনিবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর পরে এ দিন দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালার টুইট তোপ, ‘‘এই ঘটনায় অর্থমন্ত্রী সরকারের চুরি ঢাকতে মরিয়া। অন্য নানা ঘটনায় যা করেছেন।’’
দাওয়াই
• ভেঙে দেওয়া হল পুরনো পরিচালন পর্ষদ।
• নতুন পর্ষদে ছয় সরকার মনোনীত প্রতিনিধি।
• কোটাক ব্যাঙ্কের এমডি-সিইও উদয় কোটাক আইএল অ্যান্ড এফএসের নন-এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান।
• পর্ষদে কোটাক ছাড়াও টেক মহীন্দ্রার প্রাক্তন এগ্জ়িকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান বিনীত নায়ার, সেবির প্রাক্তন চেয়ারম্যান জি এন বাজপেয়ী, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের নন-এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারপার্সন জি সি চতুর্বেদী, আইএএস অফিসার মালিনী শঙ্কর এবং প্রাক্তন আমলা নন্দ কিশোর।
কেন্দ্রের দাবি
• পুরনো পর্ষদ যে ভাবে আইএল অ্যান্ড এফএস হোল্ডিং ও শাখা সংস্থাগুলি পরিচালনা করেছে, তা আমজনতার স্বার্থের পরিপন্থী।
• সংস্থাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে নতুন পর্ষদের আওতায় ঢেলে সাজা হবে পরিচালন ব্যবস্থা।
• আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে নামবে কেন্দ্রের এসএফআইও।
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির অবশ্য অভিযোগ, আইএল অ্যান্ড এফএস নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপ সম্পর্কে কংগ্রেস ভুল তথ্য দিচ্ছে। কেন্দ্রের বরং দাবি, ৯১ হাজার কোটি টাকা ঋণে পর্যদুস্ত সংস্থাটি ডুবলে বহু মিউচুয়াল ফান্ডও মার খাবে। ধাক্কা খাবে দেশের মূলধনী বাজার। তাই এই পদক্ষেপ।