ঘোষণা হয়েছিল বাজেটেই। সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গ হিসেবে এ বার কর্পোরেট করের হার ৩০% থেকে ২৫ শতাংশে কমিয়ে আনার রূপরেখা ঘোষণা করল মোদী সরকার। তবে পূর্ব ঘোষণা মতোই বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প সংস্থাগুলি যে নানা রকম ছাড় পেত, সেগুলিও ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে। ফলে প্রাথমিক ভাবে শিল্পমহল ধাক্কা খেতে পারে বলে অনেকেৈর আশঙ্কা।
অর্থ মন্ত্রকের প্রস্তাব, লাভ ও লগ্নির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কিংবা বিশেষ এলাকা ভিত্তিক যে কর ছাড় দেওয়া হয়, তা ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কর ছাড়ের সময়সীমাও আর বাড়ানো হবে না। উল্লেখ্য, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, টেলি যোগাযোগ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এখন কর ছাড় দেওয়া হয়। একই ভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য, জম্মু-কাশ্মীর ও হিমাচলের মতো বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্যে লগ্নির ক্ষেত্রেও রয়েছে কর ছাড়ের ব্যবস্থা।
অর্থ মন্ত্রকের প্রস্তাব, আয়কর আইনে কর ছাড়ের মাধ্যমে শিল্পে যে উৎসাহ দেওয়া হয়, তার সময়সীমা ২০১৭ সালের ৩১ মার্চের পরে আর বাড়ানো হবে না। এই প্রস্তাবে ১৫ দিনের মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থ বছরের বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘোষণা করেছিলেন, আগামী চার বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে কর্পোরেট করের হার ২৫ শতাংশে কমিয়ে আনা হবে। শিল্পমহলের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ ছিল, এ দেশে এই করের হার আন্তর্জাতিক দুনিয়ার তুলনায় অনেকটাই বেশি। আবার অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, সরকারি ভাবে কর্পোরেট করের হার ৩০% হলেও অনেক ক্ষেত্রে কর ছাড় ও নানা রকম উৎসাহ ভাতা দেওয়ার ফলে বাস্তবে অনেক সংস্থাকে ২৩ শতাংশর মতো স্বল্প হারে কর দিতে হয়।
জেটলির যুক্তি ছিল, কর ছাড়ের রেওয়াজ থাকায় এই সুবিধা আদায়ের জন্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে গোষ্ঠী তৈরি হয়। মামলা-মোকদ্দমা চলে। আখেরে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়। সরকার বা মন্ত্রীদের হাতেও নিজের পছন্দমতো কর ছাড়ের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ক্ষমতা চলে আসে। আজ অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা বলেন, ‘‘সরকারের লক্ষ্য হল কর আদায় ব্যবস্থার সরলিকরণ করে স্বচ্ছতা নিয়ে আসা এবং আইনি জটিলতা কমিয়ে মামলা-মোকদ্দমার কমানো।’’ আলাদা আলাদা ভাবে কর ছাড় দেওয়ার বদলে কর্পোরেট কর কমিয়ে আনলে হিসেবনিকেশ করাও যথেষ্ট সহজ হবে বলে অর্থ মন্ত্রকের দাবি।