মাথায় হাত সেই সব ক্রেতার, ছেলেমেয়ের বিয়ের জন্য যাঁদের গয়না না-কিনে উপায় নেই।
যে ভয়ে ক্রেতারা কাঁটা হয়ে ছিলেন, সেটাই ঘটল।
অনিশ্চয়তার কামড়ে আগেই দৌড় শুরু করেছিল পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট)। এ বার আগের দিনের তুলনায় এক লাফে ৯৬৮ টাকা বেড়ে এই প্রথম ৫০,০০০-এর মাইলফলক ছাড়াল গয়নার সোনার দামও। শুক্রবার জিএসটি ধরে ১০ গ্রাম ২২ ক্যারাট হয়েছে ৫০,৫৬২ টাকা। যা দেখে মাথায় হাত সেই সব ক্রেতার, ছেলেমেয়ের বিয়ের জন্য যাঁদের গয়না না-কিনে উপায় নেই।
অনেকেই দিশাহারা টাকার সংস্থান নিয়ে। তাঁদের আক্ষেপ, ‘‘করোনা অনেক পরিকল্পনায় জল ঢেলেছে। বিয়ে না-হয় কোনও রকমে সারা হবে। কিন্তু সর্বস্ব কুড়িয়ে-কাঁচিয়েও তো নতুন গয়না কেনা প্রায় অসম্ভব।’’
আরও পড়ুন: সরকারি উদ্যোগের বেসরকারীকরণ কী কী প্রশ্নের সামনে ফেলছে আমাদের
আরও পড়ুন: মুনাফার নিরিখে ভাতা, নতুন পথে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক
আক্ষেপ সোনার ব্যবসায়ীদেরও। বলছেন, একেই অতিমারির দাপটে গয়নার ক্রেতা প্রায় উধাও হতে বসেছে। রুজি-রোজগারে ধাক্কা লেগেছে। তার উপরে সোনার দাম আকাশ-ছোঁয়া। খুব প্রয়োজন থাকলেও এখন গয়না কেনার পথে হাঁটতে পারবেন না অনেকেই। অনেকেই গয়না কেনার বাজেট কমিয়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ দায়ে পড়ে সঞ্চিত সোনা দিয়েই কাজ সারার কথা ভাবছেন।
সম্প্রতি পাকা সোনা ৫০,০০০ টাকা ছাড়িয়েছে। শুক্রবার প্রায় হাজার টাকা বেড়ে জিএসটি-সহ তা ছুঁয়েছে ৫৩,২৭৩। স্বর্ণশিল্প মহল বলছে, পাকা সোনার দর চড়তে থাকার পরে ২২ ক্যারাটের এখানে পৌঁছনো ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। যাঁরা দাম নামার অপেক্ষায় ছিলেন, তাঁরা হতাশ। বলছেন, ‘‘সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে সুরক্ষার বর্ম মানা হয় যে সোনাকে, তা আর মধ্যবিত্ত বা সাধারণ রোজগেরের নাগালের মধ্যে রইল না।’’ চড়ছে রুপোও। প্রতি কিলোগ্রাম রুপোর বাট জিএসটি-সহ হয়েছে ৬২,২১২। বিশেষজ্ঞদের দাবি, শেয়ার বাজার, মুদ্রা বাজার, ফান্ডের মতো লগ্নি অনিশ্চিত। ফলে ভরসা বাড়ছে সোনা, রুপোর সঞ্চয়ে। একাংশ কিনে চলেছেন আর দাম চড়ছে।
সোনায় বরাবর লগ্নি করেন যাঁরা, অন্তত এ ক্ষেত্রে তাঁরা স্বস্তিতে। রুজি-রোজগার যখন করোনার থাবায় রক্তাক্ত, তখন ঘরে বা ব্যাঙ্কের লকারে পড়ে থাকা সোনা তাঁদের বড় ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে। তবে এই কম সুদের জমানায় যাঁরা শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মতো লগ্নির অনিশ্চয়তা যুঝতে সোনাকে আঁকড়ে ধরতে চাইছিলেন, তাঁরা হতাশ।