Coronavirus Lockdown

দোকান খুলে কী হবে! আক্ষেপ স্বর্ণশিল্প মহলে

গণপরিবহণ স্বাভাবিক না-হওয়ায় দোকানের কর্মী ও ক্রেতারা আসতে পারবেন না, এই আশঙ্কা  ছিলই। চোখ রাঙাচ্ছিল সোনার চড়া দামও।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ০৫:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনে টানা ৬৯ দিন বন্ধ থাকার পরে ১ জুন থেকে খুলতে শুরু করেছে সোনার গয়নার দোকান। কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। উল্টে দোকান খোলায় খরচ বইতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ফলে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন ফের দোকান বন্ধ করবেন কি না। বাজারে চাহিদা বাড়াতে গয়না কেনার জন্য ব্যাঙ্কঋণ চালুরও দাবি করছেন তাঁরা।

Advertisement

গণপরিবহণ স্বাভাবিক না-হওয়ায় দোকানের কর্মী ও ক্রেতারা আসতে পারবেন না, এই আশঙ্কা ছিলই। চোখ রাঙাচ্ছিল সোনার চড়া দামও। বুধবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম গয়নার সোনা ছিল জিএসটি ছাড়া ৪৬,৬০০ টাকা। তার উপরে রুজি-রোজগারে চোট খাওয়া সাধারণ মানুষ এখন খরচে রাশ টানার পথ নিয়েছে। তাতেই কপালে ভাঁজ বাড়ছে গয়না শিল্পের।

এ দিনই এক সমীক্ষা জানিয়েছে, ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় রোজগেরেদের বড় অংশ। তাঁরা বলছেন, ক’মাস খরচে যথাসম্ভব রাশ টানবেন। বড় মাপের খরচের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ঋণের কথাও ভাবছেন অনেকে। এই অবস্থায় গয়না কেনার জন্যও মাসিক কিস্তিতে ঋণ দেওয়ার দাবি তুলেছেন সোনার ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর সেনের অভিযোগ, “টিভি, ফ্রিজ, এসি কিনতে ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেয়। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও তারা সোনার গয়না কিনতে ধার দিতে পারে না। প্রায় ৮ বছর আগে এই ঋণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বলা হয়েছিল দেশে গয়নার ব্যবহার কমানোই এর লক্ষ্য।’’

শঙ্করবাবু এবং স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে জানান, “গয়না ব্যবসার উপরে সাড়ে ৮ কোটি মানুষের রুটি-রুজি নির্ভর করে। মোট জিডিপির ৭% আসে এই শিল্প থেকে। রফতানির বড় অংশ দখল করে আছে গয়না। এখন এই ব্যবসার যে হাল, তাতে একে বাঁচিয়ে রাখতে অবিলম্বে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের মতো গয়নায় ব্যাঙ্কঋণ চালু করা জরুরি।’’

বাবলুবাবুর দাবি, “দোকান খোলা ঠিকই। কিন্তু কর্মীরা আসতে পারছেন না। খদ্দের নেই। কবে দেখা পাব, তা-ও ঠিক নেই। অথচ দোকান খোলা রেখে বিদ্যুৎ-সহ বিভিন্ন খরচ বইতে হচ্ছে। তাই ভাবছি ফের বন্ধ করব কি না।’’

অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ফেডারেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়ার দাবি, “ছোট-বড় সব দোকানেই ৫ জনের বেশি ক্রেতাকে ঢোকানো যাবে না বলে নির্দেশ। অথচ একটা গয়না কিনতে তো একসঙ্গে ৫-৬ জন আসেন। পছন্দ করতেও সময় লাগে বেশি। অন্য ক্রেতাদের ততক্ষণ বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখব, সেটা তো হয় না। তাই এখনও পর্যন্ত শোরুম খুলিনি। সোমবার পর্যন্ত দেখে সিদ্ধান্ত নেব।’’ অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ চৌধুরীর অবশ্য দাবি, “দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে ফের কেনাবেচার মহরা দিতেই দোকান খুলেছি।’’

তবে বিক্রি না-বাড়লে যে আগামী দিনে অবস্থা আরও সঙ্গীন হবে, তা মানছেন স্বর্ণ শিল্পের প্রায় সকলেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement